রশিদ হারিয়ে গেলে মূল দলিল ফেরত পাওয়ার উপায়

রশিদ হারিয়ে গেলে মূল দলিল ফেরত পাওয়ার উপায়

Last Updated on 30/07/2025 by সাব-রেজিস্ট্রার শাহাজাহান আলী পিএএ

রেজিস্ট্রেশনের জন্য দলিল গৃহিত হলে রেজিস্ট্রি অফিস থেকে যে রশিদ দেয়া হয়, তাকে ‘৫২(১)(খ) ধারা মতে রশিদ’ বলে। রেজিস্ট্রি শেষে রেজিস্ট্রি অফিস থেকে মূল দলিল ফেরত নিতে এই রশিদের মূল কপি রেজিস্ট্রি অফিসে জমা দিতে হয়। 

যদি কেউ এই রশিদ হারিয়ে ফেলে তাহলে তাকে অতিরিক্ত কিছু কাজ করতে হবে, যা নিম্নে বর্ণনা করা হলোঃ-

রেজিস্ট্রেশন ম্যানুয়েল ২০১৪, এর ৬ষ্ট খণ্ডের ১১১ (চ) ও ১১১ (ছ) অনুচ্ছেদে রশিদ হারিয়ে গেলে মূল দলিল ফেরৎ প্রদানের কার্যপদ্ধতি বর্ণনা করা হয়েছে।

১১১ (চ) (১) রসিদ হারানোর অভিযোগ সহকারে দলিল ফেরত প্রদানের অনুরোধ সংবলিত প্রতিটি আবেদন লিখিত এবং মূল রসিদ যাহার নিকট প্রদান করা হইয়াছিল তাহার দ্বারা দাখিলকৃত হইবে। এইরূপ আবেদন প্রাপ্তির পর নিবন্ধনকারী কর্মকর্তা দাখিলকারীকে সনাক্তক্রমে রসিদ হারানোর বিষয়টি প্রমাণীত করাইয়া লইবেন। যেক্ষেত্রে দাখিলকারী গ্রহীতা নহেন, সেইক্ষেত্রে প্রাপ্তিস্বীকার পত্র সহ একটি নোটিস গ্রহীতার নিকট প্রেরণ করা হইবে (যাহার খরচ আবেদনকারী বহন করিবেন) এবং রসিদ হারানোর বিষয়ে সাক্ষ্য প্রদানের জন্য তাহাকে যুক্তিসংগত সময় প্রদান করা হইবে।
দলিলটি নিবন্ধিত না হইয়া থাকিলে, সাদা কাগজে রসিদের একটি প্রতিলিপি দেওয়া যাইবে; পক্ষান্তরে যদি দলিলটি নিবন্ধিত হইয়া থাকে, তাহা হইলে দলিলটি ফেরত দেওয়া যাইবে। হারানো রসিদটির পরিবর্তে নিবন্ধনকারী কর্মকর্তা এক খন্ড সাদা কাগজের প্রথম পৃষ্ঠায় নিম্নের প্রত্যায়ন লিপিবদ্ধ করিয়া মুড়িপত্রে লাগাইয়া রাখিবার ব্যবস্থা করিবেনঃ-
“প্রত্যয়ন করা যাইতেছে যে, মূল রসিদ হারানোর বিষয়টি আমার নিকট প্রমাণিত হইয়াছে বিধায় দাখিলকারীকে যথাযথরূপে সনাক্তক্রমে অপর পৃষ্ঠায় প্রাপকের সাক্ষর অনুযায়ী দলিলটি ফেরত দেওয়া হইল।
তারিখ………… নিবন্ধনকারী কর্মকর্তা।”

 

(২) যেক্ষেত্রে আবেদনকারী দলিল দাখিলকারী নহেন, সেক্ষেত্রে নিম্নবর্ণিত পদ্ধতি অনুসরণ করিতে হইবে;
(অ) গ্রহীতা কর্তৃক রসিদ হারানোর অভিযোগ সহকারে দলিল ফেরত প্রদানের অনুরোধ সংবলিত লিখিত আবেদন দাখিল করিতে হইবে।
(আ) আবেদনের সহিত স্থানীয় থানায় রসিদ হারানোর বিষয়ে সাধারণ ডায়েরি ভুক্তির ফটোকপি, আবেদনকারীর সাম্প্রতিক তোলা ১(এক) কপি পাসপোর্ট আকারের ফটো, উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ইস্যুকৃত জাতীয় পরিচয়পত্র বা পাসপোর্ট বা জন্ম নিবন্ধন সনদের ফটোকপি সংলগ্নি আকারে প্রদান করিতে হইবেঃ
তবে শর্ত থাকে যে, গ্রহীতা সরকার বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা, তফসিলভুক্ত ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিস্থান হইলে সেইক্ষেত্রে উল্লিখিত সংলগ্নির প্রয়োজন হইবেনা।
(ই) নিবন্ধনকারী কর্মকর্তা উক্তরূপ আবেদন প্রাপ্ত হইয়া গ্রহীতার পরিচয় সম্পর্কে স্বয়ং সন্তুষ্ট হইবেন এবং ক্ষেত্রমত, দলিলের সহিত সংযুক্ত ফটো এবং জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর বা পাসপোর্ট বা জন্ম নিবন্ধন সনদের সহিত যাচাই করিবেন এবং দলিলে সংগৃহীত স্বাক্ষরের সহিত আবেদনে প্রদত্ত স্বাক্ষর মিলাইবেন।
(ঈ) রসিদ হারানোর বিষয়ে নিবন্ধনকারী কর্মকর্তার নিকট হাজির হইয়া সাক্ষ্য প্রদানের নিমিত্ত যুক্তিসঙ্গত সময় প্রদান করিয়া আবেদনকারীর ব্যয়ে দলিলের দাখিলকারী এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে অন্যান্য গ্রহীতাগণের বরাবর প্রাপ্তিস্বীকারপত্রসহ রেজিস্টার্ড ডাকযোগে একটি নোটিস প্রেরিত হইবে।
(উ) দলিলের দাখিলকারী বা অন্যান্য গ্রহীতা হাজির হইলে বা নির্ধারিত সময়-সীমা উত্তীর্ণ হইলে, নিবন্ধনকারী কর্মকর্তা দফা (১) এ বর্ণিত পদ্ধতি, যতদুর প্রযোজ্য, অনুসরন করিবেন এবং দলিলটির নিবন্ধন কার্যক্রম ইতোমধ্যে সম্পন্ন হইয়া থাকিলে রসিদ হারানো সংক্রান্ত নিম্নরূপ প্রত্যায়ন প্রদান করিবেনঃ
“প্রত্যায়ন করা যাইতেছে যে, মূল রসিদ হারানোর বিষয়টি আমার নিকট প্রমাণীত হইয়াছে বিধায় দলিলের গ্রহীতাকে যথাযথরূপে সনাক্তক্রমে অপর পৃষ্ঠায় প্রাপকের সাক্ষর অনুযায়ী দলিলটি ফেরত প্রদান করা হইল।
তারিখ…………. নিবন্ধনকারী কর্মকর্তা।”

(৩) ফিসের তালিকার দফা ‘চ (১) (অ) বা (আ)’ এর অধীন তল্লাশি ফিস আদায় করিতে হইবে এবং সাদা কাগজে উপর্যুক্ত (১) অনুচ্ছেদে উল্লিখিত প্রত্যায়ন লিপিবদ্ধ করিতে হইবে। যেক্ষেত্রে তল্লাশী বা পরিদর্শন ফিস আদায়যোগ্য সেইক্ষেত্রে, নির্ধারিত ফরমে, আবেদনপত্র প্রযোজ্য।

১১১ (ছ) রসিদ হারানোর ক্ষেত্রে আবেদনকারীর টিপছাপ প্রদান করিতে হইবেঃ
রসিদ হারানোর অভিযোগে দলিল ফেরত প্রদানের আবেদনের ক্ষেত্রে এই উদ্দেশ্যে সংরক্ষিত ভিন্ন টিপছাপ রেজিস্টারে আবেদনকারীর টিপছাপ গ্রহন করিতে হইবে। রেজিস্টারের ২ নং কলামের শিরোনামের স্থলে “আবেদনকারীর নাম, স্বাক্ষর ও দলিলে বর্ণিত তাহার সামাজিক ও পেশাগত অবস্থান” হাতে লিখিয়া পরিবর্তন করিতে হইবে।
দলিলটি ফেরত দেওয়ার পূর্বে, নিবন্ধনকারী কর্মকর্তা দলিলে বিদ্যমান পূর্বের টিপছাপের সহিত, যদি থাকে, বর্তমানে গৃহীত টিপছাপের তুলনা করিয়া স্বয়ং সন্তুষ্ট হইবেন যে, এইরূপ ক্ষেত্রে সন্দেহের কোনো অবকাশ নাই।

 

 

সাব-রেজিস্ট্রার শাহাজাহান আলী পিএএ

4 comments

Leave a Reply to Rasel Cancel reply

  • মূল খারিজ হারিয়েছে.. কিভাবে আবার ফিরে পাব???

  • স্যার আমার একটি প্রবলেম এর কথা আপনার কাছে শেয়ার করলাম এটার সমাধা দিলে খুবই উপকৃত হব

    ১৯১৮ ইং সালের একটি সাফ কবলা দলিল যাহার তফসিল নিম্নরূপ ( আমাদের মৌজাতে ২৬ শতাংশে পাকি হিসাব )
    CS খতিয়ানে মোট জমি ১৯০ শতাংশ , মালিক ২ জন আঁট আনা করে হিস্যা
    ( রহিম ৯৫ শতাংশ এর মালিক এবং করিম ৯৫ শতাংশ এর মালিক )

    * এই চৌহদ্দি মধ্যে জমি ৫ গণ্ডা ইহার ষোল আনী রকমে হিস্যা ৷৷৵. অংশতে (৩৷⁄ গণ্ডা দাগ নং ১২৩ ডিঃ ৬১
    * এই চৌহদ্দি মধ্যে জমি (৩৸ দাগ নং ১৩০ ডিঃ ১৩
    * এই চৌহদ্দি মধ্যে জমি ⁄ . পাকি দাগ নং ১৭৬ ডিঃ ৩৩
    * এই চৌহদ্দি মধ্যে জমি ⁄ .৶1৸৵ পাকি দাগ নং ১৬০ ডিঃ ৩১
    ইহা দারা কোন দাগে কি পরিমান জমি বিক্রিত বুঝায় ? অর্থাৎ রহিমের অংশ থেকে কি পরিমান জমি বিক্রি করা হল ?
    ব্রিটিশ কানি, গণ্ডার হিসাবে কি পরিমান জমি বিক্রি করা হল ?

    এই বিষয় স্থানীয় সালিশিবর্গ কুনো সমাধান দিতে পারেনাই

error: Content is protected !!