Last Updated on 07/05/2025 by সাব-রেজিস্ট্রার শাহাজাহান আলী পিএএ
নিবন্ধন অগ্রাহ্যকরণ
৮৭। দলিল গ্রহণে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন।- নিম্নবর্ণিত অবস্থাধীন নিবন্ধনের জন্য আনীত কোন দলিল গ্রহণ করা হইবে না: (১) যদি ইহা এমন কোন ভাষায় লিখিত হয় যাহা নিবন্ধনকারী কর্মকর্তার বোধগম্য নহে এবং যাহা।
জেলায় সাধারণভাবে প্রচলিত নহে এবং ইহার সহিত একটি সঠিক অনুবাদ ও তদুপরি একটি
অবিকল নকল সংযুক্ত না থাকে (ধারা ১৯)।
(২) যদি ইহাতে সত্যায়নবিহীন পঙুক্তির মধ্যবর্তী লিখন, শূন্যস্থান, ঘষামাজা বা পরিবর্তন থাকে
যাহা, নিবন্ধনকারী কর্মকর্তার মতে, সত্যায়িত হওয়া বা দলিলটির প্রান্তভাগে “কৈফিয়ত” আকারে অন্তর্ভুক্ত হওয়া আবশ্যক (ধারা ২০)।
(৩) যদি ইহাতে অন্তর্ভুক্ত সম্পত্তির বিবরণ ইহাকে সনাক্ত করিবার জন্য অপর্যাপ্ত হয় বা ইহাত সংবিধিবদ্ধ আদেশ নং ৬ অনুসারে আবশ্যকীয় তথ্যাদি না থাকে | ধারা ২১(১) হইতে (৩) ও ২২)।
(8) যদি দলিলে অন্তর্ভুক্ত কোন ম্যাপ বা প্ল্যানের এক বা একাধিক প্রতিলিপি ইহার সহিত সংযুক্ত না থাকে (ধারা ২১(৪)]।
(৫) যদি দলিলটিতে সম্পাদনের তারিখ উলেখ করা না হয় বা যদি সঠিক তারিখ নিরূপণযোগ্য না হয় (ধারা ১৭ ও ২৩)।
(৬) যদি ইহা নির্ধারিত সময়ের পর দাখিল করা হয় [ধারা ১৭ক, ২৩, ২৪, ২৫, ২৬, ৭২(২), ৭৫(২) এবং ৭৭(১)]।
(৭) যদি ইহা যথার্থ কার্যালয়ে দাখিল করা না হয় [ধারা ২৮ এবং ২৯)।
(৮) যদি ইহা কোন নাবালক, নির্বোধ বা উনাদ অথবা এমন কোন ব্যক্তি কর্তৃক দাখিল করা হয় ধারা ৩২ বা ৪০ এর অধীন যাহার এইরূপ দাখিল করিবার কোন ক্ষমতা নাই।
(৯) যদি ইহাতে পক্ষগণের অভিপ্রায় প্রতিফলনের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্যাদি, সম্পত্তির পূর্ণ বিবরণ। এবং হস্তান্তরের প্রকৃতি অন্তর্ভুক্ত না থাকে [ধারা ২২(১)]।
(১০) যদি ইহাতে সম্পাদনকারী ও গ্রহীতা উভয়ের সাম্প্রতিক তোলা পাসপোর্ট আকারের ছবি আঠা দ্বারা লাগানা এবং উহার উপর আড়াআড়িভাবে পক্ষগণের বাম বৃদ্ধাঙ্গুলির টিপছাপ না থাকে [ধারা ২২ক(২)]।
(১১) যদি ইহা নিবন্ধন আইন, ১৯০৮ এর ধারা ২২ক এর উপ-ধারা (৩) এর অধীন নমুনা। (Format) অনুসারে প্রস্তুত করা না হয়।
(১২) যদি ইহাতে নিবন্ধন আইন, ১৯০৮ এর ধারা ৫২ক এর অধীন কতিপয় প্রয়োজনীয় তথ্য সন্নিবেশিত না থাকে।
৮৮। যথারীতি দাখিলকৃত দলিল অগ্রাহ্যকরণ।- নিম্নবর্ণিত অবস্থাধীন নিবন্ধনের জন্য যথাযথভাবে দাখিলকৃত দলিল নিবন্ধনের জন্য গ্রাহ্য করা হইবে না:
(১) যদি সম্পাদনকারী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে উপস্থিত হইতে এবং সম্পাদন স্বীকার করিতে ব্যর্থ হন (ধারা ৩৪)।
(২) যদি সম্পাদনকারী সম্পাদন অস্বীকার করেন [ধারা ৩৫(৩)(ক)]।
(৩) যদি সম্পাদনকারী মর্মে দাবিকৃত ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করেন এবং তাহার প্রতিনিধি বা মনোনীত ব্যক্তি উক্ত সম্পাদন অস্বীকার করেন [ধারা ৩৫(৩)(গ)]।
(৪) যদি সম্পাদনকারী মর্মে দাবিকৃত ব্যক্তি নাবালক, নির্বোধ বা উন্মাদ বলিয়া প্রতীয়মান হন [ধারা। ৩৫(৩)(খ)]।
(৫) যদি নিবন্ধনকারী কর্মকর্তা তাহার সম্মুখে উপস্থিত এবং দলিল সম্পাদনকারী মর্মে দাবিদার
কোন ব্যক্তির পরিচয় সম্বন্ধে সন্তুষ্ট না হন [ধারা ৩৫(১)(ক)]।
(৬) যদি নিবন্ধনকারী কর্মকর্তা কোন দলিল সম্পাদনকারীর মৃত্য সংক্রান্ত অভিযোগের সত্যতার। বিষয়ে সন্তুষ্ট না হন [ধারা ৩৫(১)(গ)]।
(৭) যদি সম্পাদন স্বীকারকারী এজেন্টের পাওয়ার অব অ্যাটর্নি আইন অনুযায়ী সৃষ্ট না হইয়া থাকে, বা যদি কথিত প্রতিনিধি বা মনোনীত ব্যক্তি তাহার আইনানুগ অবস্থান প্রমাণ করিতে ব্যর্থ হন [ধারা ৩৫(১)(খ)], [ধারা ৩৫(১)(গ)]।। (৮) যদি উইলকারী বা দাতার মৃত্যুর পর দাখিলকৃত কোন উইল বা দত্তকগ্রহণের ক্ষমতাপত্রের সম্পাদনের বিষয়ে নিবন্ধনকারী কর্মকর্তা সন্তুষ্ট না হন (ধারা ৪১)।।
(৯) যদি নির্ধারিত ফিস বা জরিমানা পরিশোধ না করা হয় (ধারা ২৫, ৩৪ এবং ৮০)।
(৫), (৬) ও (৭) নং অনুচ্ছেদে উল্লিখিত ক্ষেত্রে, নিবন্ধনকারী কর্মকর্তা ধারা ৩৪ এর অধীন নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে আইনের উদ্দেশ্য পূরণে পক্ষগণকে সক্ষম করিবার জন্য তাহাদের অনুরোধে তাহার ব্যবস্থা গ্রহণ বিলম্বিত করিবেন।
৮৯। সম্পাদন অস্বীকারকরণের ব্যাখ্যা।- (ক) সম্পাদন অস্বীকারকরণ নিম্নবর্ণিতভাবে হইতে পারে, যথা
(১) প্রকাশ্য; অর্থাৎ বাস্তব, যেক্ষেত্রে সম্পাদনকারী, বা তাহার প্রতিনিধি, বা মনােনীত ব্যক্তি নিবন্ধনকারী কর্মকর্তার সম্মুখে সম্পাদন অস্বীকার করেন, বা
(২) উহ্য বা পরোক্ষ; অর্থাৎ অনুমানসিদ্ধ বা কার্যত, যেক্ষেত্রে আইন মোতাবেক সমন জারির। পর সম্পাদন স্বীকার করিবার জন্য উপস্থিত হইবার বিষয়ে সম্পাদনকারীর অস্বীকৃতি বা অবহেলা সম্পর্কে নিবন্ধনকারী কর্মকর্তা সন্তুষ্ট হন। এইরূপ সকল ক্ষেত্রে ধারা ৭৩ এর অধীন আবেদনের। মাধ্যমে গ্রহীতার প্রতিকার নিহীত আছে। (খ) নির্ধারিত সময় অতিক্রান্তের পর, সম্পাদনকারী গরহাজির থাকিবার সাধারণ কারণে, নিবন্ধন অগ্রাহ্যকরণের হেতু ধারা ৩৫ এর অধীন নহে, বরং ধারা ৩৪ এর উপ-ধারা (১) এর অধীন উদ্ভব হয়। এবং ধারা ৭২ এর অধীন আপিলে ইহার প্রতিকার নিহীত আছে।
বিঃ দ্রঃ- ইহা সিদ্ধান্ত হইয়াছে যে, যদি পর্দানশীন সম্পাদনকারী উপযুক্ত ৮৩(খ) অনুচ্ছেদে উল্লিখিত পদ্ধতিতে নিবন্ধনকারী কর্মকর্তা বা কমিশনারের সম্মুখে উপস্থিত হইতে বা তাহার প্রশ্নের জবাব দিতে অস্বীকার করেন, তাহা হইলে পরিকল্পিতভাবে সম্পাদন অস্বীকৃতির কারণে নিবন্ধন অগ্রাহ্য করা যাইতে পারে। কিন্তু সম্পাদনকারীকে কমিশনের আবেদনে বর্ণিত স্থানে পাওয়া না গেলে, নিবন্ধনকারী কর্মকর্তা দাতার ইচ্ছাকৃত অনুপস্থিতির বিষয়ে সন্তোষজনক প্রমাণ না পাওয়া পর্যন্ত তাৎক্ষণিকভাবে দলিলটির নিবন্ধন অগ্রাহ্য করিবেন না।
৯০। প্রকৃত অস্বীকৃতিজ্ঞাপনের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ।- সম্পাদন, বাস্তব অস্বীকৃতিজ্ঞাপনের ঘটনাবলি জেলা রেজিস্ট্রারকে প্রতিবেদনের মাধ্যমে জ্ঞাত করিতে হইবে, যাহাতে তিনি দলিলের স্বাক্ষরটি জাল কিনা, বা সম্পাদনকারী নিবন্ধনকারী কর্মকর্তার সম্মুখে মিথ্যা বক্তব্য প্রদান করিয়াছেন কিনা, উহা। অনুসন্ধান করিতে পারেন এবং প্রতিটি ক্ষেত্রে তাহার বিবেচনামত অধিকতর ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে পারেন।। জেলা রেজিস্ট্রারের নিকট প্রেরিত প্রতিটি প্রতিবেদনের সহিত সংশ্লিষ্ট দলিল সংযুক্ত করিতে হইবে ও প্রেরিত বিষয়টি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত এবং সংশ্লিষ্ট পক্ষের নিকট দলিলটি ফেরত প্রদানের জন্য, জেলা রেজিস্ট্রারের আদেশ না পাওয়া পর্যন্ত উহা পক্ষের নিকট ফেরত প্রদান করা যাইবে না।
৯১। দলিলে প্রতারণামূলক পরিবর্তন।– যেক্ষেত্রে কোন ব্যক্তি কোন দলিলে তাহার প্রদত্ত স্বাক্ষর স্বীকারকরত উল্লেখ করেন যে, দলিলটির তারিখ, অর্থাৎ যে তারিখ হইতে দলিলে প্রত্যক্ষকৃত লেনদেনটি কার্যকর হইবে, উহা বা তথায় নিহীত অন্য কোন গুরুত্বপূর্ণ শর্ত প্রতারণামূলকভাবে সম্পাদনের পর পরিবর্তন করা হইয়াছে, সেইক্ষেত্রে নিবন্ধনকারী কর্মকর্তা দলিলটি নিবন্ধন করিতে অস্বীকার করিবেন, কারণ কথিত সম্পাদনকারী প্রতারণামূলকভাবে পরিবর্তিত দলিলটির সম্পাদন অস্বীকার করিতেছেন এবং প্রদত্ত স্বাক্ষর স্বীকারকরণের বিষয়টি হইল মূল দলিল, অর্থাৎ পরিবর্তনবিহীন দলিলের সম্পাদন স্বীকৃতি, যাহাতে এইরূপ স্বাক্ষর প্রদান করা হইয়াছিল।
৯২। কতিপয় ব্যক্তি কর্তৃক সম্পাদিত দলিল নিবন্ধন।- (ক) কতিপয় ব্যক্তি কর্তৃক সম্পাদিত দলিলের। এক বা একাধিক সম্পাদনকারী সম্পাদন অস্বীকার করিয়াছেন বা নাবালক, নির্বোধ, উন্মাদ প্রতীয়মান। হইয়াছেন কিংবা মৃত্যুবরণ করিয়াছেন, কেবল এই কারণে দলিলটির নিবন্ধন অগ্রাহ্য করা হইবে না, বরং পক্ষগণের অন্য যে কেহ সম্পাদন স্বীকার করিলে তাহার ক্ষেত্রে নিবন্ধন করা হইবে।
(খ) যেক্ষেত্রে একটি দলিলের সম্পাদনকারীগণ বিভিন্ন সময়ে উপস্থিত হন, সেক্ষেত্রে প্রত্যেক সম্পাদনকারীর স্বীকারোক্তি বা অস্বীকৃতি দলিলে লিপিবদ্ধ করা যাইবে, কিন্তু সকল সম্পাদনকারী উপস্থিত হইয়া সম্পাদন স্বীকার বা, ক্ষেত্রমত, অস্বীকার না করা পর্যন্ত এবং উপস্থিতির জন্য আইন অনুমোদিত সর্বোচ্চ সময় অবসান না হওয়া পর্যন্ত, দলিলটি নিবন্ধনের জন্য গ্রহণ বা ইহার নিবন্ধন অগ্রাহ্যকরণ, কোনটিই করা যাইবে না।
৯৩। কতিপয় ব্যক্তি কর্তৃক সম্পাদিত দলিলের নিবন্ধন অগ্রাহ্যকরণ সম্পর্কিত পদ্ধতি।- কতিপয় ব্যক্তি কর্তৃক সম্পাদিত দলিল অগ্রাহ্যকরণের পদ্ধতি বিধি ৫০ এ বর্ণিত আছে। এইক্ষেত্রে সম্ভাব্য তিনটি অবস্থা রহিয়াছে, যথা :(১) যেক্ষেত্রে সকলেই নিবন্ধনকারী কর্মকর্তার সম্মুখে উপস্থিত হইয়া কতক সম্পাদন স্বীকার করেন এবং একই সময়ে কতক অস্বীকার করেন। (২) যেক্ষেত্রে আইন মোতাবেক পরোনা জারি করা সত্ত্বেও কতক উপস্থিত হইয়া সম্পাদন স্বীকার করেন, পক্ষান্তরে অন্যরা হাজির হন না; এবং (৩) যেক্ষেত্রে কতক হাজির হইয়া সম্পাদন স্বীকার করেন, পক্ষান্তরে অন্যরা উপস্থিত হন না এবং শেষােক্তদের উপস্থিতকরণের বিষয়ে পক্ষগণ কর্তৃক কোন পদক্ষেপও গ্রহণ করা হয় না। প্রথম ক্ষেত্রে যে পদ্ধতি অনুসরণ করিতে হইবে তাহা সুস্পষ্ট, অর্থাৎ যাহারা সম্পাদন অস্বীকার করেন, তাহাদের ক্ষেত্রে দলিলটির নিবন্ধন অগ্রাহ্য করা হইবে এবং যাহারা স্বীকার করেন তাহাদের ক্ষেত্রে নিবন্ধন করা হইবে। দ্বিতীয় ক্ষেত্রে, যদি, পরোয়ানা জারির পর সংশ্লিষ্ট সম্পাদনকারীগণ নির্ধারিত তারিখে বা তৎপূর্বে উপস্থিত না হন, তাহা হইলে নিবন্ধনকারী কর্মকর্তা অনুপস্থিত ব্যক্তিগণের ক্ষেত্রে রীতিসিদ্ধ অগ্রাহ্য আদেশ লিপিবদ্ধ করিবেন এবং অন্য যাহারা সম্পাদন স্বীকার করেন তাহাদের ক্ষেত্রে নিবন্ধন করিবেন; বৈধ পরোয়ানা জারির পর উপস্থিত না হওয়া তাহাদের দ্বারা সম্পাদন অস্বীকার করিবার শামিল। তৃতীয় ক্ষেত্রে, অনুপস্থিত ব্যক্তিদের কারণে আইনে অনুমোদিত সময় অতিক্রান্ত না হওয়া পর্যন্ত। দলিলটি অপেক্ষমান রাখিতে হইবে এবং উক্ত সময় অতিক্রান্ত হইবার পর তাহাদের ক্ষেত্রে নিবন্ধন অগ্রাহ্য করিতে হইবে এবং যাহারা সম্পাদন স্বীকার করেন তাহাদের ক্ষেত্রে দলিলটি নিবন্ধন করিতে হইবে।
৯৪। কতিপয় ব্যক্তি কর্তৃক সম্পাদিত ও আংশিক অগ্রাহ্যকৃত দলিলের অগ্রাহ্যকরণের বিবরণ লিপিবদ্ধকরণ।- যেক্ষেত্রে কোন দলিল কতিপয় ব্যক্তি কর্তৃক সম্পাদিত হয় এবং তাহাদের কাহারও ক্ষেত্রে নিবন্ধন অগ্রাহ্য করা হয়, সেইক্ষেত্রে অগ্রাহ্যকৃত” শব্দটির পরে “ক এর ক্ষেত্রে” শব্দাবলি বা অনুরূপ শব্দাবলি সংযোজন করিয়া লিপিবদ্ধ করিতে হইবে।
৯৫। নাবালকের আনুমানিক বয়স এবং নির্বুদ্ধিতাজনিত অগ্রাহ্যকরণের কারণ ২ নং রেজিস্টার বহিতে লিপিবদ্ধ করিতে হইবে।- সম্পাদনকারীগণের নাবালকত্বের দরুন নিবন্ধন অগ্রাহ্যের কারণ লিপিবদ্ধকরণের ক্ষেত্রে নাবালকের আনুমানিক বয়স সর্বদাই উল্লেখ করিতে হইবে। অনুরূপভাবে, নির্বুদ্ধিতাজনিত কারণে অগ্রাহ্যের ক্ষেত্রে, সম্পাদনকারীকে নির্বোধ বিবেচনা করিবার কারণসমূহ সংক্ষেপে বর্ণনা করিতে হইবে।
৯৬। মূক ও বধির ব্যক্তির দ্বারা সম্পাদিত দলিল।- মূক ও বধির ব্যক্তির দ্বারা সম্পাদিত দলিল নিবন্ধন করা যাইবে, যদি উক্ত ব্যক্তি কোন উপায়ে বা অন্যভাবে তাহার সম্পাদন স্বীকারের ইচ্ছা ব্যক্ত করিতে পারেন। এইরূপ ক্ষেত্রে নিবন্ধনকারী কর্মকর্তা, যে সকল প্রাসঙ্গিক বিষয় তাহাকে তাহার সিদ্ধান্তে উপনীত হইতে সহায়তা করিয়াছে, তৎসম্পর্কে সম্পাদন স্বীকারের পৃষ্ঠাঙ্কনে একটি সংক্ষিপ্ত টীকা লিপিবদ্ধ করিবেন। পক্ষান্তরে যদি সম্পাদনকারীকে জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলি উপলব্ধির ক্ষেত্রে তাহার সামর্থ্যের বিষয়ে নিবন্ধনকারী কর্মকর্তা সন্তুষ্ট না হন, তাহা হইলে তিনি নিবন্ধন আইনের ধারা ৩৫(৩)। এর অধীন দলিলটির নিবন্ধন অগ্রাহ্য করিবেন।
৯৭। অগ্রাহ্যের আদেশ অবহিতকরণ।- নিবন্ধনকারী কর্মকর্তা তাহার প্রদত্ত দলিল নিবন্ধন অগ্রাহ্যকরণের আদেশ দলিল দাখিলকারীর নিকট এবং যে সকল ক্ষেত্রে দাখিলকারী গ্রহীতা নহেন, সেইক্ষেত্রে গ্রহীতার নিকটও প্রমাণপত্রসহ ডাকযোগে প্রেরণ করিবেন, এবং এইরূপ কাজ সম্পন্নের বিষয়ে প্রেরণের তারিখ ও মাধ্যমের উল্লেখ করিয়া ২ নং রেজিস্টার বহিতে একটি টীকা লিপিবদ্ধ করিবেন। যোগাযোগটি যদি মৌখিকভাবে সম্পন্ন হয়, তাহা হইলে ২ নং রেজিস্টার বহিতে পক্ষের স্বাক্ষর, বা পক্ষ অশিক্ষিত হইলে, তাহার বৃদ্ধাঙ্গুলির টিপছাপ লইতে হইবে।
৯৮। রেজিস্ট্রার কর্তৃক নিবন্ধন অগ্রাহ্যকরণ ২ নং রেজিস্টার বহিতে লিপিবদ্ধ করিতে হইবে।- কোন রেজিস্ট্রার কোন দলিলের নিবন্ধন অগ্রাহ্যকরণের নির্দেশ প্রদানকালে অগ্রাহ্যের কারণসমূহ তাহার কার্যালয়ের ২ নং রেজিস্টার বহিতে লিপিবদ্ধ করিবেন। এইরূপ বিষয় নিম্নে উল্লেখ করা হইল:
(১) রেজিস্ট্রার কর্তৃক নিবন্ধন আইন, ১৯০৮ এর ধারা ৭২ এর অধীন আপিল বিবেচনাকালে প্রদত্ত। দলিলের নিবন্ধন অগ্রাহ্যের আদেশ। এই অগ্রাহ্যকরণ ধারা ৭৬(১)(খ) এর অন্তর্গত।
৯৯। অনৈতিক বা আইনবিবর্জিত দলিল।- কোন দলিলের পণ বা অভীষ্ট লক্ষ্য অনৈতিক বা অন্য কোনভাবে আইনবিবর্জিত হওয়ার কারণে উহার নিবন্ধন অগ্রাহ্য করা যাইবে না। এইসকল ক্ষেত্রে যাহাতে নিবন্ধনের জন্য দাখিলকৃত কোন দলিলে একটি শিশু-বালিকাকে গণিকার নিকট হস্তান্তর বা অন্য কোন ব্যক্তির নিকট অনৈতিক উদ্দেশ্যে হস্তান্তর করিবার বা কোন ব্যক্তির উপর অবৈধ কর বা বেআইনি শর্ত আরোপ করিবার অভিপ্রায় ব্যক্ত করা হয়, সাব-রেজিস্ট্রার কর্তক উহা জেলা রেজিস্ট্রারকে অবহিত করিতে হইবে, যাহাতে পারিপার্শ্বিক অবস্থা সন্দেহজনক হইলে, জেলা রেজিস্টার তদন্ত করিতে পারেন, এবং, প্রয়োজনে, অধিকতর ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে পারেন।
১০০। কালেক্টর কর্তৃক বিচারার্থে রক্ষিত দলিলে আইনের ধারা ১৭ক, ধারা ২৩ হইতে ২৬ ও ধারা ৩২ এর অধীন সময় গণনা।- বিধি নির্দেশকগণ (Logal Remembrancer) কতৃক সিদ্ধান্ত প্রদান করা হইয়াছে যে, স্ট্যাম্প শুল্ক নিরূপনের জন্য একটি আটককৃত দলিল যতদিন পর্যন্ত কালেক্টরের নিকট থাকিবে, নিবন্ধন আইনের ধারা ১৭ক, ধারা ২৩ হইতে ২৬ ও ধারা ৩৪ এর। এ ধারা ৩৪ এর অধীন সময় গণনাকালে উক্ত সময় বাদ দেওয়া যাইবে না।
১০১। নিবন্ধন সমাপ্তকরণের কোন সময়সীমা নাই।- যেহেত নিবন্ধীকরণ বা অগ্রাহ্যকরণের প্রকৃত বিষয়টির জন্য কোন সময়সীমা নাই, সেইহেতু যে সকল বিষয়ে সময়সীমা নিধারয়ের মধ্যে আইনের উক্ত সকল প্রয়োজনীয় শর্ত পরণ সাপেক্ষে দলিলটি আইন-অনুমোদিত সময়ের দাখিলকৃত এবং সম্পাদন স্বীকত হইয়া থাকিলে নির্ধারিত সময়সীমার পর, কালেক্টরের নিকট হই, ফেরতপ্রাপ্ত দলিলের নিবন্ধন সমাপ্ত করিতে কোন বাধা নাই।
১০২। আটককৃত দলিল কালেক্টরের নিকট প্রেরণের পদ্ধতি।- (ক) যেক্ষেত্রে কোন ব্যতিক্রমী অবস্থায়, সম্পাদনকারীর নিকট হইতে সম্পাদন স্বীকতি লাভের পর্বে কোন আটককত দলিল কালেক্টরের নিকট প্রেরণ করিতে হয়, সেইক্ষেত্রে যে পর্যায়ে দলিলটি আটক করা হইয়াছে তাহা দলিলের সহিত প্রেরত পত্রে উল্লেখ করিতে হইবে, এবং সম্পাদন স্বীকার করিতে পক্ষগণের উপস্থিতির জন্য নিধারিত সময় অতিক্রান্ত হওয়ার পূর্বে বিচারান্তে দলিলটি ফেরত প্রদানের জন্য অনুরোধ জানাইতে হইবে। কালেক্টরের নিকট প্রেরিত পত্রে ইহা সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করিতে হইবে যে, যদি দলিলটি নির্ধারিত তারিখের মধ্যে (সঠিকরূপে গণনার পর তারিখটি উল্লেখ করিতে হইবে যাহাতে বিধি ২৮ এর অধীন নোটিশ জারির জন্য পর্যাপ্ত সময় পাওয়া যায়) ফেরত পাওয়া না যায় তাহা হইলে, সংশ্লিষ্ট পক্ষের ত্রুটি থাকা সত্ত্বেও দলিলটির নিবন্ধন অগ্রাহ্য করা হইবে।
(খ) দলিলটি একটি নিবন্ধিত ডাকে প্রেরণ করিতে হইবে এবং যদি যুক্তিসঙ্গত সময়ের মধ্যে দলিলটির প্রাপ্তিস্বীকারপত্র পাওয়া না যায়, তাহা হইলে তৎসম্পর্কে পত্র দ্বারা কালেক্টরকে স্মরণ করাইয়া দিতে হইবে। নির্ধারিত সময় অতিক্রান্ত হওয়ার পূর্বে, সম্পাদন স্বীকার করিবার উদ্দেশ্যে সম্পাদনকারীগণের উপস্থিতির জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করিতে নিবন্ধনকারী কর্মকর্তাকে সক্ষম করিবার জন্য ১০২(ক) অনুচ্ছেদ অনুসারে প্রেরিত দলিলের বর্ণনা-সংবলিত পত্রের বিষয়েও সময়মত কালেক্টরের নিকট তাগিদপত্র প্রেরণ করিতে হইবে। যে তারিখে তাগিদপত্রটি প্রেরণ করা হইবে সেই তারিখটি উল্লিখিত দলিলের বর্ণনা-সংবলিত পত্র প্রেরণ করিবার সঙ্গে সাব-রেজিস্ট্রারের দিনপঞ্জির মন্তব্যের ঘরে লিপিবদ্ধ করিতে হইবে।
(গ) একটি দলিল আটক করাকালে নজিরের উদ্ধৃতিসহ, যদি থাকে, উহা আটক করিবার কারণসমহ। কালেক্টরের নিকট প্রেরিত পত্রে অথবা আটককৃত দলিলের সহিত সংযুক্ত ফরমে লিপিবদ্ধ করিতে হইবে।
(ঘ) আটককৃত দলিল কালেক্টরের নিকট প্রেরণ করাকালে নিবন্ধনকারী কর্মকর্তা দলিলের বর্ণনা সংবলিত পত্রে দলিল প্রস্তুতকরণে ব্যবহৃত ফর্দ সংখ্যা, সত্যায়নবিহীন ঘষামাজা বা পরিবর্তন ইত্যাদি বর্ণনা করিবেন। এইরূপ দলিল কালেক্টরের নিকট হইতে ফেরত আসিবার পর ফেরতপ্রাপ্ত দলিলটিতে কোনপ্রকার অনধিকারপূর্ণ হস্তক্ষেপ করা হইয়াছে কিনা, সেই বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার জন্য নিবন্ধনকারী কর্মকর্তা কর্তৃক উহা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পরীক্ষিত হইবে।
কালেক্টরের নিকট হইতে দলিল ফেরত পাওয়ার পর বিধি ২৮ এ নিহিত নির্দেশসমূহ। কঠোরভাবে অনুসরণ করিতে হইবে। যে সকল ক্ষেত্রে দাখিলকারী দলিলের গ্রহীতা নহেন, সেই সকল ক্ষেত্রে দলিল নিবন্ধনের পদক্ষেপ গ্রহণ করিবার জন্য গ্রহীতার নিকট নােটিশ পাঠাইতে হইবে। এই নােটিশ এবং বিধি ২৮ এ উল্লেখিত নােটিশ ডাকবিভাগের প্রমাণপত্রসহ প্রেরণ করিতে হইবে, যাহা আটককৃত দলিলের রেজিস্টারে, যথাযথ ভুক্তিসমূহের বিপরীতে, লাগাইয়া রাখিতে হইবে।
১০৩। বিধি ৫১, ৫২ এবং ৫৪ এর সারাংশ।– (ক) সম্পাদন স্বীকারের জন্য অপেক্ষমান দলিল:
(১) যদি ধারা ১৭ক বা ধারা ২৩ এর অধীন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দাখিল করা।হয়, তাহা হইলে ধারা ১৭ক বা
ধারা ২৩ এর অধীন নির্ধারিত সময়। অতিক্রান্তের চার মাস পর;
(২) যদি ধারা ২৫ অনুসারে বর্ধিত সময়ের মধ্যে দাখিল করা হয়, তাহা হইলে। ধারা ১৭ক বা ধারা ২৩ এর
অধীন নির্ধারিত সময় অতিক্রান্তের আট মাস পর; এবং
(৩) যদি ধারা ২৬ এর অধীন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দাখিল করা হয়, তাহা । হইলে বাংলাদেশে আগমনের
তারিখ হইতে আট মাস পর উহার নিবন্ধন অগ্রাহ্য করা হইবে।
(খ) বাংলাদেশের বাহিরে সকল বা যে কোন পক্ষ কর্তৃক সম্পাদিত দলিল বাংলাদেশে আগমনের চার মাসের মধ্যে দাখিল না করা হইলে নিবন্ধনের জন্য গ্রহণ করা হইবে না।
Add comment