আই জি আর ইন্সট্রাকশন পঞ্চম অধ্যায়

Last Updated on 08/05/2025 by সাব-রেজিস্ট্রার শাহাজাহান আলী পিএএ

অধ্যায় ৫

নিবন্ধনের জন্য দলিল গ্রহণ-পূর্ব প্রক্রিয়া

৩৫। নিবন্ধনের জন্য দাখিল করিবার উদ্দেশ্যে দলিল লিখন।- নিবন্ধনের জন্য দাখিলকৃত সকল পাশ কালি দ্বারা লিখিত, চামড়া সদৃশ, পার্চমেন্ট বা উদ্ভিজ্জ কাগজে লিখিত হইবে, যাহা ফুলস্কেপ কাগজের এক পার্শ্বের অর্ধেক শিটের কম নহে এমন পরিমাণ খালি জায়গা ধারণ করিবে অথবা এইরূপ খালি জায়গাসহ একটি কভারিং স্লিপে যুক্ত থাকিবে।


 

৩৬। ভিন্ন কালি, ইত্যাদি দ্বারা লিখিত দলিলে কৈফিয়ত।- যখন আংশিক বিভিন্ন কালি, কলম বা হস্তলিখিত কোন দলিল নিবন্ধনের জন্য দাখিল করা হয়, তখন বিষয়টি দলিলের পাদদেশে লিপিবদ্ধ। করিয়া স্বাক্ষর প্রদান করিবার জন্য নিবন্ধনকারী কর্মকর্তা দাখিলকারীকে পরামর্শ দিবেন। যদি দাখিলকারী উক্ত পরামর্শ পালনে অস্বীকার করেন তবে, নিবন্ধনকারী কর্মকর্তা রেজিস্টার বহিতে ইহার নকলের স্থানে নিবন্ধন আইনের ধারা ২০ অনুসারে টীকা লিখিবার জন্য সংরক্ষিত মার্জিনে এতদ্বিষয়ে একটি টীকা লিপিবদ্ধ করিবেন।


৩৭। নিবন্ধনকারী কর্মকর্তার বাসভবনে দলিল গ্রহণ।- নিবন্ধনকারী কর্মকর্তার ব্যক্তিগত বাসভবনে নিবন্ধনের জন্য দলিল গ্রহণ করা অবৈধ।


 

৩৮। দলিল দাখিল গ্রহণে অস্বীকারকরণের ক্ষেত্রে মহিলা, বয়স্ক বা পীড়িত ব্যক্তিগণের বিষয়ে। বিবেচনা করা।- নিবন্ধনকারী কর্মকর্তাগণ মহিলা, বয়স্ক, পীড়িত বা দূরবর্তী এলাকা হইতে আগত ব্যক্তিদের দ্বারা দিনের নির্ধারিত সময়ের শেষভাগে দাখিলকৃত দলিল গ্রহণ করিতে অস্বীকার করিবার ক্ষেত্রে তাহাদের স্বীয় বিবেচনা প্রয়োগ করিবেন।


 

৩৯। সময়াভাবে ফেরত প্রদত্ত দলিলে টীকা লিপিবদ্ধকরণ। যদি সাব-রেজিস্ট্রার কোনদিন সময়াভাবে। দলিল গ্রহণ করিতে অসমর্থ হন, তাহা হইলে তিনি দলিলটিতে পেন্সিল দ্বারা এই বিষয়ে তারিখসহ তাহার অনুস্বাক্ষরে একটি টীকা লিপিবদ্ধ করিবেন যাহাতে পরবর্তীতে দাখিলকারী উপস্থিত হইলে তিনি দলিলটি প্রথমেই গ্রহণ করিতে পারেন। অবশ্য দাখিল করিবার নির্ধারিত সময়ের পর দাখিলকত দলিলের ক্ষেত্রে এইরূপ কোন টীকা লিপিবদ্ধ করিবার প্রয়োজন নাই। নিবন্ধনকারী কর্মকর্তা এইরুপ ফেরত প্রদত্ত মোট দলিলের সংখ্যা তাহার দিনপঞ্জিতে লিপিবদ্ধ করিবেন।


৪০। যথাযথরূপে স্ট্যাম্পযুক্ত নহে বা প্রত্যায়িত নহে এমন দলিল নিবন্ধন করা যাইবে না।- (ক) স্ট্যাম্প আইনের ধারা ৩৫ এর অধীন শুল্ক ধার্যযোগ্য কোন দলিল যথাযথরূপে স্ট্যাম্পযুক্ত না হইলে। উহা নিবন্ধন বা প্রমাণীকরণ করা যাইবে না। সম্পাদনের সময় যথাযথরূপে স্ট্যাম্পযুক্ত নহে এইরূপ। দলিল কেবলমাত্র উহাতে স্ট্যাম্প আইনের ধারা ৩২(৩) বা ধারা ৪২(১) অনুসারে নির্ধারিত প্রত্যয়নপত্র থাকিলেই নিবন্ধন করা যাইবে।।

(খ) যদি ত্রিশ পয়সা বা ষাট পয়সা শুল্ক আদায়যোগ্য কোন দলিল বা কোন বিনিময় বিল বা প্রমিসরি নোট যথাযথভাবে স্ট্যাম্পযুক্ত নহে এমন কোন কাগজে প্রস্তুতপূর্বক দাখিল করা হয়, তাহা হইলে উহা নিবন্ধনের জন্য গৃহীত হইবে না, তবে নিবন্ধনকারী কর্মকর্তা, উপযুক্ত মনে করিলে স্ট্যাম্প আইনের ধারা ৬৪ অনুসারে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উহা কালেক্টর বরাবরে প্রেরণ করিতে পারিবেন।।

(গ) কোন দলিলের দাখিলকারী বা সম্পাদনকারীর নাম স্ট্যাম্প বিক্রেতার প্রত্যায়নপত্রে না থাকিবার কারণে স্ট্যাম্পটি অবৈধভাবে প্রাপ্ত বা দলিলটি যথাযথভাবে স্ট্যাম্পযুক্ত নহে মর্মে ধারণা পোষণ করা যুক্তিযুক্ত নহে। সেইহেতু, স্ট্যাম্প আইনের ধারা ৩৫ এর বিধানসমূহ এইরূপ দলিল নিবন্ধনের ক্ষেত্রে প্রয়োগের বিষয়ে নিবন্ধনকারী কর্মকর্তাকে বারিত করে না। অধিকন্তু নিবন্ধনকারী কর্মকর্তা, উপযুক্ত মনে করিলে, এইরূপ ঘটনা কালেক্টরকে অবহিত করিতে পারিবেন।

(ঘ) নিবন্ধনের জন্য দাখিলকৃত দলিল দ্বারা সূচিত সম্পত্তির মূল্য পরীক্ষাকরণের জন্য নিবন্ধনকারী কর্মকর্তাগণ আইনত দায়ী নহেন।- স্ট্যাম্প আইনের অধীন, কোন দলিলে ঘোষিত পণের টাকার উপর প্রায় ব্যতিক্রমহীনভাবে মূল্যানুসারে শুল্ক প্রদেয়। অতএব, নিবন্ধনকারী কর্মকর্তাগণের কর্তব্য হইল। লক্ষ্য রাখা যে, দলিলটি উপযুক্ত বর্ণনার স্ট্যাম্প দ্বারা স্ট্যাম্পযুক্ত হইয়াছে যাহার মূল্য দলিলে উল্লিখিত পণের টাকাকে সংকুলান করিতে যথেষ্ট। যদি ইহা তাহার গোচরীভূত হয় যে, যথাযথ শুল্ক পরিশোধ পরিহার করিবার জন্য পণ অপর্যাপ্তভাবে বর্ণনা করা হইয়াছে বা স্ট্যাম্প আইনের ২৭ ধারার অধীন। আবশ্যক কোন দলিলের শুল্ক ধার্যযোগ্যতাকে প্রভাবিত করে এমন বিষয় বা অবস্থা সম্পূর্ণরূপে বা সঠিকভাবে বর্ণনা করা হয় নাই, তাহা হইলে তিনি উহা আটক করিতে পারিবেন না, কিন্তু কালেক্টরের বিবেচনামত উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করিবার জন্য বিষয়টি তাহাকে (কালেক্টরকে) অবহিত করিতে হইবে।


 

৪১। স্ট্যাম্প শুল্ক সম্পর্কিত পরামর্শ।- যদি কোন দলিলের সম্পাদনকারী বা গ্রহীতা দলিলটিতে। ধার্যযোগ্য সঠিক স্ট্যাম্প শুল্কের বিষয়ে নিশ্চিত না হন এবং দলিলটি নিয়মানুসারে দাখিল করিবার পূর্বে এই বিষয়ে নিবন্ধনকারী কর্মকর্তার সহিত পরামর্শ করেন, তবে দলিলটি আটক (Impound) না করিয়া তাহাকে প্রয়ােজনীয় তথ্য প্রদান করা যাইতে পারে। একই সঙ্গে উক্ত ব্যক্তির নিকট ব্যাখ্যা করা। যাইতে পারে যে, যদি তিনি প্রামাণ্য মতামত চাহেন, তাহা হইলে তিনি স্ট্যাম্প আইন, ১৮৯৯ (১৮৯৯ সনের ২ নং আইন) এর ধারা ৩১ এর অধীন কালেক্টরের নিকট সিদ্ধান্ত চাহিয়া আবেদন করিতে। পারিবেন। কিন্তু অপর্যাপ্ত স্ট্যাম্পসহ কোন দলিল নিয়মানুসারে দাখিল করা হইলে উহা অবশ্যই আটক করিতে হইবে।


 

৪২। দলিল নিবন্ধীকরণে আপত্তি (Objection)।- আইন ও বিধির অধীন দলিলসমূহের গ্রহণযোগ্যতা নির্ধারণ করা স্বয়ং নিবন্ধনকারী কর্মকর্তার কর্তব্য। অতএব, নিবন্ধীকরণে আপত্তি। বিবেচনায় নেওয়া হইবে না তবে, যদি আপত্তির আবেদনপত্র দাখিল করা হইয়া থাকে তাহা হইলে, উহাতে ‘আপত্তিকারী যেরূপ উপযুক্ত মনে করেন, সেইরূপ আইনসম্মত পদক্ষেপ গ্রহণ করিতে পারিবেন মর্মে পৃষ্ঠাঙ্কনসহ উক্ত আবেদনপত্র ফেরত প্রদান করিতে হইবে।


 

৪৩। সম্পাদনকারী এবং লেখক কর্তৃক দলিল সত্যায়ন।- (ক) দলিলের প্রতিটি পৃষ্ঠা সম্পাদনকারী পক্ষের স্বাক্ষর বা অনুস্বাক্ষর দ্বারা সত্যায়িত হওয়া বাঞ্ছনীয় এবং লেখককেও শেষ পৃষ্ঠার প্রান্তভাগে তাহার নাম স্বাক্ষর করিতে হইবে এবং আবাসস্থলের বিবরণ প্রদান করিতে হইবে।

(খ) নিবন্ধনকারী কর্মকর্তা যে সকল সম্পাদনকারী লিখিতে ও পড়িতে পারেন না তাহাদিগকে এই মর্মে উপদেশ দিবেন যে, তাহারা যেন দলিল লিখক বা সাক্ষীগণের দ্বারা দলিলটি ব্যাখ্যাপূর্বক বুঝিয়া নেন। দলিল লিখক বা সাক্ষী দলিলে নিমরূপ প্রত্যায়ন প্রদান করিবেন: “ হস্তান্তরিত সম্পত্তির সঠিক পরিচয় এবং বাজার মূল্য সম্পর্কে সম্যক অবহিত হইয়া আমি নিম্নস্বাক্ষরকারী অত্র দলিল মুসাবিদা করিয়াছি/লিখিয়া দিয়াছি এবং পক্ষগণকে পাঠ করিয়া শুনাইয়াছি। দলিলটি ………. ফর্দে লিখিত।

কখ

লেখক বা সাক্ষী”

যাহা হউক, এইরূপ প্রত্যায়নপত্রের অবর্তমানে কোন দলিলের নিবন্ধন অগ্রাহ্য করা যাইবে না এবং তাহা উচিতও হইবে না।


 

৪৪। দলিলের নিবন্ধনযোগ্যতার বিষয়ে পরামর্শ প্রদান নিবন্ধনকারী কর্মকর্তার কর্তব্য নহে।- কোন দলিলের নিবন্ধন বাধ্যতামূলক বা ঐচ্ছিক কিনা এই বিষয়ে পরামর্শ প্রদান করা নিবন্ধনকারী কর্মকর্তার কর্তব্য নহে।


 

৪৫। সাক্ষীগণ কর্তৃক প্রতিপাদনের বিষয়ে দলিল পরীক্ষাকরণ।- যে আইন একটি দলিলের সম্পাদন নিয়ন্ত্রণ করে সেই আইনের বিধান অনুসারে আবশ্যক সাক্ষীগণ কর্তৃক দলিল-প্রতিপাদন প্রকৃতই সম্পন্ন। হইয়াছে কিনা তাহা পরীক্ষা করা নিবন্ধনকারী কর্মকর্তার কর্তব্যের অংশ নহে।


 

৪৬। আংশিক উইল এবং আংশিক উইল ব্যতীত অন্য প্রকারের দলিল সম্পর্কে পরামর্শ ।- আংশিক উইল এবং আংশিক উইল ব্যতীত অন্য প্রকার দলিল নিবন্ধনের জন্য দাখিল করা হইলে প্রত্যেক শ্রেণির একটি করিয়া ভিন্ন দুইটি দলিল সম্পাদন করিবার পরামর্শসহ দলিলটি দাখিলকারীর নিকট। ফেরত দিতে হইবে। এতৎসত্ত্বেও যদি দাখিলকারী দলিলটি গ্রহণ ও নিবন্ধন করিবার জন্য সনির্বন্ধ অনুরােধ করেন, তাহা হইলে নিবন্ধনকারী কর্মকর্তা উইল ব্যতীত অন্য প্রকার অংশের ক্ষেত্রে। এখতিয়ার থাকা সাপেক্ষে এইরূপ দলিলের প্রত্যেক অংশের জন্য ভিন্ন ভিন্ন ফিস ধার্যপুর্বক বহি নং ১ ও বহি নং ৩, উভয় রেজিস্টারে, উক্ত দলিল নিবন্ধন করিবেন।


৪৭। দলিলের প্রতিলিপির অমিল সমন্বয়করণ।- যেক্ষেত্রে কোন দলিল দ্বিলিপি বা ত্রিলিপিসহ নিবন্ধনের জন্য দাখিল করা হয়, সেইক্ষেত্রে নিবন্ধনকারী কর্মকর্তা ২য় বা ৩য় প্রতিরিপিকে দ্বিলিপি বা ত্রিলিপি হিসাবে গণ্য করিবেন যদি উহারা মূল দলিলের অনুরূপ যথাযথ পুনঃপ্রস্তুতকৃত এবং একই তারিখযুক্ত হয়। যদি কোন অমিল ধরা পড়ে, তাহা হইলে দলিলটি নিবন্ধনের জন্য গৃহীত হওয়ার পূর্বে দাখিলকারীকে উক্ত অমিল সমন্বয় করিতে হইবে। যদি মূল দলিলে ম্যাপ বা নকশা থাকে, তাহা হইলে। দ্বিলিপি বা ত্রিলিপির সহিত ইহার একটি প্রতিলিপি সংযুক্ত করিতে হইবে।

কোন দলিলের প্রতিপত্র ইহার মূল দলিলের অনুরূপ একই তারিখযুক্ত হওয়ার আবশ্যকতা নাই।


 

৪৮। গ্ৰহণ করিবার পূর্বে দলিল পরীক্ষাকরণ।- নিবন্ধনের জন্য প্রতিটি দলিল গ্রহণ করিবার পূর্বে পরীক্ষা করিয়া নিশ্চিত হইতে হইবে যে, দাখিলকারী পক্ষের দলিল দাখিল করিবার অধিকার রহিয়াছে। এবং নিবন্ধনকারী কর্মকর্তার উহা নিবন্ধনের কর্তৃত্ব রহিয়াছে। অধিক্ষেত্রের উদ্দেশ্যে দলিলসমূহকে চারটি শ্রেণিতে বিভক্ত করা যাইতে পারে, যথা:

(১) ধারা ২৮(১) এ বর্ণিত উইল ব্যতীত স্থাবর সম্পত্তি সংক্রান্ত অন্য প্রকার দলিল;

(২) উইল এবং দত্তক গ্রহণের ক্ষমতাপত্র;

(৩) আদালতের রায় এবং আদেশের নকল; এবং

(৪) অন্যান্য সর্বপ্রকার দলিল

উল্লিখিত দলিলসমূহ সম্পর্কে নিম্নোক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে হইবে:

(ক) প্রথম শ্রেণিতে উল্লিখিত দলিল কেবলমাত্র যে নিবন্ধনকারী কর্মকর্তার অধিক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সম্পত্তির বৃহত্তর অংশ অবস্থিত উক্ত নিবন্ধনকারী কর্মকর্তা কর্তৃক নিবন্ধনের জন্য গৃহীত হইতে পারে।

(খ) দ্বিতীয় শ্রেণিতে উল্লিখিত দলিল যে কোন কার্যালয়ে নিবন্ধন করা যাইতে পারে।

(গ) স্থাবর সম্পত্তি সংক্রান্ত রায় বা আদেশের নকলের ক্ষেত্রে রায় প্রদানকারী মূল আদালত যে নিবন্ধনকারী কর্মকর্তার অধিক্ষেত্রে অবস্থিত সেই কর্মকর্তা কর্তক, বা যে নিবন্ধনকারী কর্মকর্তার অধিক্ষেত্রে স্থাবর সম্পত্তি অবস্থিত সেই কর্মকর্তা কর্তৃক নিবন্ধন করিবার বিষয়টি ইচ্ছাধীন। যদি ইহা স্থাবর সম্পত্তি সংক্রান্ত না হয়, তাহা হইলে রায় বা আদেশের অধীন সকল গ্রহীতাগণ সরকারের অধীনস্থ যে কোন নিবন্ধনকারী কর্মকর্তার কার্যালয়ে নিবন্ধন করিবার ইচ্ছা প্রকাশ করিবেন, সেই কার্যালয়ে উহা নিবন্ধন করা যাইতে পারে।

(ঘ) চতুর্থ শ্রেণিতে উল্লিখিত দলিল যে নিবন্ধনকারী কর্মকর্তার অধিক্ষেত্রে সম্পাদিত হইয়াছে, সেই নিবন্ধনকারী কর্মকর্তার কার্যালয়ে অথবা সরকারের অধীনস্থ অন্য যে কোন নিবন্ধনকারী কর্মকর্তার কার্যালয়ে যেখানে সকল সম্পাদনকারী ও গ্রহীতাগণ নিবন্ধন করিবার ইচ্ছা প্রকাশ করিবেন, সেই কার্যালয়ে নিবন্ধন করা যাইতে পারে।

(ঙ) জেলা রেজিস্ট্রারগণ কর্তৃক নিবন্ধনের উদ্দেশ্যে দলিল গ্রহণ।- (বাতিল)।

(চ) আংশিক সম্পত্তি বাংলাদেশে অবস্থিত দলিলের নিবন্ধন।- যেক্ষেত্রে একটি দলিলে অন্তর্ভুক্ত। সম্পত্তি আংশিক বাংলাদেশে এবং আংশিক বাংলাদেশের বাহিরে অবস্থিত, সেইক্ষেত্রে বাংলাদেশের যে। জেলায় বা থানায় আংশিক সম্পত্তি অবস্থিত সেই জেলায় বা থানায় এইরূপ দলিল নিবন্ধন করা। যাইবে। কিন্তু এইরূপ ক্ষেত্রে নিবন্ধনের প্রত্যায়নে এই মর্মে টীকা প্রদর্শিত হইতে হইবে যে, সম্পত্তির যে অংশ এই আইনের অধীন প্রযোজ্য উক্ত অংশের জন্য নিবন্ধন কার্যকর হইয়াছে। বাংলাদেশের। বাহিবে বা এই আইন যেখানে বলবৎ নহে, সেখানে কোন নকল বা স্মারকলিপি প্রেরণের প্রয়োজন নাই।

(ছ) আংশিক পার্বত্য চট্টগ্রামে অবস্থিত সম্পত্তির দানপত্র, বিক্রয় বা বন্ধকী দলিল গ্রহণ না করা। যেক্ষেত্রে কোন দানপত্র, বিক্রয় বা বন্ধকী দলিলে অন্তর্ভুক্ত সম্পত্তির আংশিক পার্বত্য চট্টগ্রামে অবস্থিত সেইক্ষেত্রে পার্বত্য চট্টগ্রাম প্রশাসনের জন্য বিদ্যমান বিধি-বিধানের অধীন পার্বত্য চট্টগ্রামের জেলা। প্রশাসকের নিকট হইতে হস্তান্তর কার্যকর করিবার জন্য লিখিত অনুমতি সংযুক্ত না হওয়া পর বাংলাদেশে কোন সাব-রেজিস্ট্রারের নিকট উক্ত দলিল নিবন্ধনের জন্য গৃহীত হইবে না।


 

৪৯। প্রতিনিধি, মনোনীত ব্যক্তি বা এজেন্ট কর্তক দাখিলকরণ।- কোন দলিল যদি কোন প্রতিনিধি মনোনীত ব্যক্তি দ্বারা দাখিল করা হয়, তাহা হইলে তাহাকে তাহার আইনানুগ পদমর্যাদার বিষয়ে নিবন্ধনকারী কর্মকর্তাকে সন্তুষ্ট করিতে হইবে। যেক্ষেত্রে এজেন্ট কতৃক তাহাকে অবশ্যই নিবন্ধন আইনের ধারা ৩৩ এ নির্ধারিতরূপে প্রমাণীকৃত পাওয়ার অব অ্যাটর্নি উপস্থাপন করিতে হইবে। কিন্তু পাওয়ারদাতা কর্তক তাহার পক্ষে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে এজেন্ট কর্তৃক সম্পাদিত দলিল এবং পাওয়ারদাতা কর্তৃক সম্পাদিত ও তাহার পক্ষে ক্ষমতাপ্রাপ্ত এজেন্ট কর্তৃক নিবন্ধনের জন্য দাখিলকৃত দলিল- এই দুইয়ের মধ্যে যাহাতে বিভ্রান্তি সৃষ্টি না হয় সেই বিষয়ে অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করিতে হইবে। একজন এজেন্ট যিনি কোন দলিলের প্রকৃত সম্পাদনকারী, তাহার। দলিল সম্পাদন করা বা দলিলের অন্তর্গত সম্পত্তি লেনদেন করা সম্পর্কে তাহার ক্ষমতার বিষয়ে। নিশ্চিত হওয়া নিবন্ধনকারী কর্মকর্তার কর্তব্যের অংশ নহে। নিবন্ধনকারী কর্মকতা এইরূপ ক্ষমতার কোন নিশ্চিত প্রমাণ রেকর্ডভক্ত করেন না। তাহার কাজ হইল, যে ব্যক্তি দলিলটি সম্পাদন করিতে অভিপ্রেত তিনি বাস্তবিক উহা করিয়াছেন কিনা, তদ্বিষয়ে লক্ষ্য রাখা। তিনটি সম্ভাব্য ঘটনার উদ্ভব হইতে পারে, যথা

(১) যেক্ষেত্রে প্রকৃত সম্পাদনকারী হাজির হন;

(২) যেক্ষেত্রে উক্ত ব্যক্তির প্রতিনিধি বা মনোনীত ব্যক্তি হাজির হন; এবং

(৩) যেক্ষেত্রে সম্পাদনকারীর এজেন্ট হাজির হন।

প্রথম ক্ষেত্রে, নিবন্ধনকারী কর্মকর্তা উপস্থিত ব্যক্তি সম্পাদন স্বীকার করেন বা করেন না কেবলমাত্র। সেই সম্পর্কে এবং তাহার পরিচিতির বিষয়ে নিশ্চিত হইবেন। সম্পাদনকারী কোন ক্ষমতাবলে। দলিলটিতে স্বাক্ষর প্রদান করিয়াছেন সেই বিষয়ে তাহার উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ নাই।

দ্বিতীয় ক্ষেত্রে, নিবন্ধনকারী কর্মকর্তা প্রতিনিধি বা মনোনীত ব্যক্তির এইরূপে হাজির হওয়ার এবং সম্পাদন স্বীকার করিবার অধিকারের বিষয়ে নিশ্চিত হইবেন।

তৃতীয় ক্ষেত্রে, তাহাকে কেবলমাত্র লক্ষ্য রাখিতে হইবে যে, যে ব্যক্তি এজেন্ট হিসাবে উপস্থিত হইয়াছেন, তিনি ধারা ৩৩ এর বিধান অনুসারে যথাযথভাবে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কিনা এবং সম্পাদন স্বীকার করিয়া পাওয়ারদাতা অর্থাৎ পাওয়ার অব অ্যাটর্নির সম্পাদনকারীকে আবদ্ধ করেন কিনা।


 

৫০। সরকারি কর্মকর্তা বা সরকারি পদে অধিষ্ঠিত ব্যক্তিগণের নিবন্ধন কার্যালয়ে হাজির হওয়ার। আবশ্যকতা নাই।- (ক) (১) আইনের ধারা ৮৮(১) অনুসারে সুনির্দিষ্ট কোন সরকারি কর্মকর্তা বা কোন সরকারি পদে অধিষ্ঠিত ব্যক্তিকে তাহার সরকারি পদ মর্যাদায় তাহার দ্বারা সম্পাদিত কোন দলিলের নিবন্ধনের সহিত সম্পৃক্ত কোন কার্য প্রসঙ্গে বা ধারা ৫৮ এ বর্ণিত মতে স্বাক্ষর প্রদানের জন্য। কোন নিবন্ধন কার্যালয়ে, ব্যক্তিগতভাবে বা এজেন্টের মাধ্যমে, হাজির হওয়ার আবশ্যকতা নাই।

(২) এগ্রিকালচারাল ডেটরস অ্যাক্ট, ১৯৩৫ এর ধারা ২৫ এর অধীন স্বাক্ষরিত মিমাংসাপত্র। (Award) বা ধারা ২১ বা ধারা ২২ এর উপধারা (৫) এর অধীন প্রদত্ত সার্টিফিকেট ধারা। ৪৭ এর উপধারা (১) অনুসারে নিবন্ধনের উদ্দেশ্যে উক্ত আইনের অধীন কোন বোর্ডের। সভাপতি নিবন্ধন আইন, ১৯০৮ এর ধারা ৮৮ এর অধীন এইরূপ দলিল সম্পাদন কবিতার ক্ষমতা সম্পন্ন সরকারি কর্মকর্তা হিসাবে বিবেচিত হইবেন।

(৩) জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান এবং সচিব নিবন্ধনকারী কর্মকর্তার সম্মুখে ব্যক্তিগত হাজিরা হইতে অব্যাহতি প্রাপ্ত।

(8) সমবায় সমিতি আইন, ২০০১ এর ধারা ৭৭ এর উদ্দেশ্য পূরণকল্পে কোন সমবায় ভূমি উন্নয়ন ব্যাংক কিংবা প্রাথমিক বা জাতীয় সমবায় সমিতির কোন সদস্য বা কর্মকর্তা, উল্লিখিত ব্যাংক বা সমবায় সমিতির পক্ষে দলিল সম্পাদনের দায়িত্বপ্রাপ্ত হইলে তিনি নিবন্ধন কার্যালয়ে ব্যক্তিগত হাজিরা হইতে অব্যাহতি প্রাপ্ত হইবেন, তবে শর্ত থাকে যে, উক্তরূপ সম্পাদনের সঠিকতা সম্পর্কে নিবন্ধনকারী কর্মকর্তা মতামত গ্রহণ করিতে পারেন।

(খ) যে নিবন্ধনকারী কর্মকর্তার নিকট এইরূপ কোন দলিল নিবন্ধনের জন্য দাখিল করা হয়, তিনি ধারা ৮৮(২) এর অধীন সম্পাদনের বিষয়ে নিশ্চিত হইবেন এবং উপযুক্ত মনে করিলে, মতামত প্রদানের জন্য বিষয়টি উক্ত কর্মকর্তা বা সরকারি পদে অধিষ্ঠিত ব্যক্তির নিকট প্রেরণ করিতে পারিবেন।

(গ) প্রতিটি ক্ষেত্রেই সরকারি কর্মকর্তা বা পদাধিকারীর নিকট মতামতের জন্য দৃষ্টি আকর্ষণ করা অবশ্যকরণীয় নহে, কিন্তু নিবন্ধনকারী কর্মকর্তা স্বয়ং সম্ভাব্য সর্বাধিক সুবিধাজনক উপায়ে, অব্যাহতিপ্রাপ্ত ব্যক্তির স্বাক্ষরের যথার্থতা সম্বন্ধে নিশ্চিত হইবেন। উদাহরণস্বরূপ, যদি কোন সরকারি। কর্মকর্তা কর্তৃক ডাকযোগে বা দূত মারফত কোন দলিল তাহার দ্বারা সম্পাদিত হইয়াছে এবং তিনি উহা নিবন্ধন করিতে চাহেন মর্মে অনুগমনপত্রসহ প্রেরিত হয়, তবে সাধারণভাবে উক্ত পত্রই যথেষ্ট। হইবে। ইহা ছাড়া, যেক্ষেত্রে নিবন্ধনকারী কর্মকর্তা উক্ত কর্মকর্তার স্বাক্ষরের সহিত পরিচিত, সেক্ষেত্রে। কোন মতামতের আবশ্যক হইবে না। যদি কোন দলিল কোন একজন গ্রহীতা বা তাহার প্রতিনিধি বা এজেন্ট দ্বারা দাখিল করা হয়, তাহা হইলে তাহার নিকট সংক্ষিপ্ত তথ্যানুসন্ধান করা যাইতে পারে। নিবন্ধনকারী কর্মকর্তার সন্তুষ্ট হওয়ার মত সুবিধাজনক কোন উপায় না থাকিলেই কেবলমাত্র বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার নিকট মতামত গ্রহণ করিবার প্রয়োজন হয়।


 

৫১। দাখিলকরণে বা হাজিরায় বিলম্বের জন্য এজেন্টের মাধ্যমে ব্যাখ্যা।- যেক্ষেত্রে কোন এজেন্ট একটি দলিল দাখিল করিবার জন্য বা ইহার সম্পাদন স্বীকার করিবার জন্য হাজির হন, সেইক্ষেত্রে পাওয়ারদাতার পক্ষে এজেন্টের নিকট হইতে ধারা ২৫ অনুসারে দাখিলকরণে বিলম্বের জন্য অথবা ধারা ৩৪ অনুসারে হাজিরায় বিলম্বের জন্য আবশ্যকীয় ব্যাখ্যা আহরণ করা যাইতে পারে।


 

সাব-রেজিস্ট্রার শাহাজাহান আলী পিএএ

Add comment

error: Content is protected !!