ভূমি উন্নয়ন কর আইন, ২০২৩

Last Updated on 30/09/2023 by সাব-রেজিস্ট্রার শাহাজাহান আলী বিপিএএ

সোমবার, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২৩

বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ
ঢাকা, ৩ আশ্বিন, ১৪৩০ / ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

সংসদ কর্তৃক গৃহীত নিম্নলিখিত আইনটি ৩ আশ্বিন, ১৪৩০ মোতাবেক ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ তারিখে রাষ্ট্রপতির সম্মতিলাভ করিয়াছে এবং এতদ্বারা এই আইনটি সর্বসাধারণের অবগতির জন্য প্রকাশ করা যাইতেছে: —

২০২৩ সনের ৩১ নং আইন

ভূমি উন্নয়ন কর ধার্য ও আদায়ের লক্ষ্যে Land Development Tax Ordinance, 1976 রহিতক্রমে সময়োপযোগী করিয়া নূতনভাবে বিধান প্রণয়নকল্পে প্রণীত আইন

যেহেতু সংবিধান (পঞ্চদশ সংশোধন) আইন, ২০১১ (২০১১ সনের ১৪ নং আইন) দ্বারা ১৯৭৫ সনের ১৫ আগস্ট হইতে ১৯৭৯ সনের ৯ এপ্রিল পর্যন্ত সময়ের মধ্যে সামরিক ফরমান দ্বারা জারীকৃত অধ্যাদেশসমূহের অনুমোদন ও সমর্থন সংক্রান্ত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের চতুর্থ তফসিলের ৩ক ও ১৮ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত হইয়াছে এবং সিভিল পিটিশন ফর লিভ টু আপিল নং ১০৪৪-১০৪৫/২০০৯ এ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ কর্তৃক প্রদত্ত রায়ে সামরিক আইনকে অসাংবিধানিক ঘোষণাপূর্বক উহার বৈধতা প্রদানকারী সংবিধান (পঞ্চম সংশোধন) আইন, ১৯৭৯ (১৯৭৯ সনের ১ নং আইন) বাতিল ঘোষিত হওয়ায় উক্ত অধ্যাদেশসমূহের কার্যকরতা লোপ পাইয়াছে; এবংযেহেতু ২০১৩ সনের ৬ নং আইন দ্বারা উক্ত অধ্যাদেশসমূহের মধ্যে কতিপয় অধ্যাদেশ কার্যকর রাখা হইয়াছে; এবং যেহেতু উক্ত অধ্যাদেশসমূহের আবশ্যকতা ও প্রাসঙ্গিকতা পর্যালোচনাপূর্বক আবশ্যক বিবেচিত অধ্যাদেশসমূহ সকল স্টেকহোল্ডার ও সংশ্লিষ্ট সকল মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মতামত গ্রহণ করিয়া প্রয়োজনীয় সংশোধন ও পরিমার্জনক্রমে বাংলায় নূতন আইন প্রণয়ন করিবার জন্য সরকার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিয়াছে; এবং যেহেতু সরকারের উপরি-বর্ণিত সিদ্ধান্তের আলোকে Land Development Tax Ordinance, 1976 (Ordinance No. XLII of 1976) রহিতক্রমে সময়োপযোগী করিয়া নূতন আইন প্রণয়ন করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়;
সেহেতু এতদ্দ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইল :

 

১। সংক্ষিপ্ত শিরোনাম, প্রয়োগ ও প্রবর্তন।— (১) এই আইন ভূমি উন্নয়ন কর আইন, ২০২৩ নামে অভিহিত হইবে।
(২) ইহা সমগ্র বাংলাদেশে প্রযোজ্য হইবে:
তবে শর্ত থাকে যে, পার্বত্য জেলাসমূহের (খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি, বান্দরবান) ক্ষেত্রে হইি প্রযোজ্য হইবে না।
(৩) সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, যে তারিখ নির্ধারণ করিবে, সেই তারিখে এই আইন কার্যকর হইবে।

 

২। সংজ্ঞা। —— বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থি কোনো কিছু না থাকিলে, এই আইনে,—

(১) ‘অকৃষি ভূমি’ অর্থ Non-Agricultural Tenancy Act, 1949 (Act No. XXIII of 1949) এর section 2 এর clause (4) এ সংজ্ঞায়িত অকৃষি ভূমি (Non Agricultural land) এবং সরকার কর্তৃক, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, অকৃষি ভূমি হিসাবে নির্ধারিত ও ঘোষিত কোনো ভূমিও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;
(২) ‘ইলেকট্রনিক’ অর্থ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন, ২০০৬ (২০০৬ সনের ৩৯ নং আইন) এর ধারা ২ এর দফা (৩) এ সংজ্ঞায়িত ইলেকট্রনিক;
(৩) ‘ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা’ অর্থ ইউনিয়ন বা পৌর বা সার্কেল ভূমি অফিস অথবা ভূমি অফিসে সরকার কর্তৃক ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা হিসাবে নিয়োগকৃত কোনো ব্যক্তি, যিনি কালেক্টরের পক্ষে সংশ্লিষ্ট সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর নিয়ন্ত্রণাধীনে থাকিয়া ভূমি উন্নয়ন কর দাবি, নির্ধারণ ও আদায় সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম বাস্তবায়ন করেন;

(৪) ‘উত্তরাধিকারী’ অর্থ কোনো ব্যক্তির মৃত্যুর পর তাহার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য উত্তরাধিকার আইন অনুযায়ী তাহার রাখিয়া যাওয়া সম্পত্তির মালিকানা ও ভোগদখল করিবার অধিকারী কোনো ব্যক্তি;
ব্যাখ্যা। — ইসলাম ধর্মাবলম্বী ব্যক্তিগণের ক্ষেত্রে, মুসলিম উত্তরাধিকার আইন, হিন্দু ধর্মাবলম্বী ব্যক্তিগণের ক্ষেত্রে, হিন্দু আইন, বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী ব্যক্তিগণের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট আইন এবং খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বী ব্যক্তিগণের ক্ষেত্রে, Succession Act, 1925 (Act No. XXXIX of 1925) অনুসারে উত্তরাধিকার নির্ধারিত হইবে;
(৫) ‘কালেক্টর’ অর্থ State Acquisition and Tenancy Act, 1950 (Act No. XXVIII of 1951) এর section 2 এর clause (3) এ সংজ্ঞায়িত কালেক্টর (Collector);
(৬) কৃষিকার্যের উপর নির্ভরশীল ব্যক্তি বা পরিবার’ অর্থ শুধু কৃষিকার্য বা চাষাবাদ করিয়া জীবন ও জীবিকা নির্বাহ করিয়া থাকেন এইরূপ কোনো ব্যক্তি বা পরিবার;
(৭) ‘কৃষি ভূমি’ অর্থ কোনো চাষযোগ্য ভূমি, উহা চাষ করা হউক বা চাষ না করিয়া পতিত রাখা হউক, বাগান বা প্রাণিপালন কার্যে ব্যবহৃত কোনো ভূমি, প্রাকৃতিক বা মানব সৃষ্ট বদ্ধ জলাশয়, উহাতে মৎস্য চাষ করা হউক বা মৎস্য চাষ না করিয়া পতিত রাখা হউক পল্লি এলাকায় অবস্থিত কৃষকের কাচাভিটার বসতগৃহ ও তৎসংলগ্ন কৃষিভিত্তিক কুটির শিল্পকার্যে ব্যবহৃত ভূমিও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;
(৮) ‘নির্ধারিত’ অর্থ বিধি দ্বারা নির্ধারিত;
(৯) ‘পরিবার’ অর্থ কোনো ব্যক্তি ও তাহার স্ত্রী বা স্বামী, উক্ত ব্যক্তির উপর নির্ভরশীল পুত্র, কন্যা, পুত্রবধু, পুত্রের পুত্র, পুত্রের কন্যা এবং পিতা-মাতা:
তবে শর্ত থাকে যে, যদি কোনো পূর্ণবয়স্ক সক্ষম বিবাহিত পুত্র পিতা-মাতার নিকট হইতে পৃথক হইয়া স্বাধীনভাবে বসবাস করেন, তাহা হইলে উক্ত পুত্ৰ বা তাহার স্ত্রী, পুত্র ও কন্যা পৃথক পরিবার হিসাবে গণ্য হইবে
আরো শর্ত থাকে যে, ওয়াকফ, ওয়াকফ-আল-আওলাদ, দেবোত্তর অথবা কোনো ট্রাস্টের অধিভুক্ত ভূমির ক্ষেত্রে, উক্ত ভূমির সকল সুবিধাভোগীদের মধ্যে যাহাদের উক্ত ভূমি ব্যক্তিগত ভূমির ন্যায় হস্তান্তরের অধিকার নাই, সেই সকল সুবিধাভোগীকে এইক্ষেত্রে সম্মিলিতভাবে একটি পরিবার হিসাবে গণ্য করিতে হইবে;
(১০) ‘পল্লি এলাকা’ অর্থ পৌরসভা, সিটি কর্পোরেশন এবং সরকার কর্তৃক ঘোষিত বিশেষ এলাকা ব্যতীত, অন্যান্য এলাকা;
(১১) ‘পৌর এলাকা’ অর্থ সরকার কর্তৃক ঘোষিত পৌরসভা বা সিটি কর্পোরেশন এলাকা

(১২) ‘বৎসর’ অর্থ জুলাই মাসের ১ তারিখ হইতে জুন মাসের ৩০ তারিখ পর্যন্ত সময়কাল;
(১৩) ‘বাণিজ্যিক কার্যে ব্যবহৃত ভূমি’ অর্থ হাট-বাজার, বিপণী বিতান, সুপারমার্কেট, শপিং মল, দোকান, বাণিজ্যালয়, সওদাগরি অফিস, বাণিজ্য কেন্দ্র, বাণিজ্যিক কার্যে ব্যবহৃত ভবন ও স্থাপনা, পণ্য ক্রয়-বিক্রয় বা পণ্য উঠানো-নামানোর স্থান বা ব্যবসা সংশ্লিষ্ট কার্যক্রমের জন্য রক্ষিত বা স্থাপিত স্থান, স্থাপনা, ভবন বা এতৎসংশ্লিষ্ট অফিস বা নিবাস এবং কোনো বাণিজ্যিক কার্যে ব্যবহৃত হউক বা না হউক, এতদুদ্দেশ্যে অর্জিত, বরাদ্দকৃত বা নির্ধারিত ভূমি।
(১৪) ‘ব্যাংক’ অর্থ Bangladesh Bank Order, 1972 (President’s Order No. 127 of 1972) এর Article 2(j) তে সংজ্ঞায়িত কোনো Scheduled Bank এবং সরকারি বা বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং মোবাইল ব্যাংক, বিকাশ, নগদ, নেক্সাস, শিওর ক্যাশ, এমক্যাশ, ইউক্যাশ, রকেট এর ন্যায় সরকার কর্তৃক অনুমোদিত অর্থ লেন-দেনকারী সকল প্রতিষ্ঠানও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;
(১৫) ‘ভূমি’ অর্থ State Acquisition and Tenancy Act, 1950 (Act No. XXVIII of 1950)এর section 2 এর clause (16) এ সংজ্ঞায়িত কোনো ভূমি (land);
(১৬) ‘ভূমি উন্নয়ন কর’ অর্থ যে কোনো শ্রেণির ভূমির উপর সরকার কর্তৃক নির্ধারিত হারে প্রদেয় বাৎসরিক কর;
(১৭) ভূমি মালিক’ অর্থ কোনো ব্যক্তি বা সংস্থা যাহার অধিকারে হালনাগাদ স্বত্বলিপিতে (Record of Rights) সরকার ঘোষিত সর্বোচ্চ সীমার (যদি থাকে) মধ্যে ভূমির মালিকানা রেকর্ড রহিয়াছে অথবা যিনি উত্তরাধিকারসূত্র, ক্রয়সূত্র বা অন্যকোনো বৈধসূত্রে অথবা এখতিয়ারসম্পন্ন আদালত বা উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের আদেশসূত্রে ভূমির মালিকানা অর্জন করিয়াছেন;
(১৮) ‘শিল্পকার্যে ব্যবহৃত ভূমি’ অর্থ শিল্প কারখানা স্থাপন ও পরিচালনায় ব্যবহৃত এবং এতদুদ্দেশ্যে বরাদ্দকৃত বা নির্ধারিত কোনো ভূমি এবং শিল্প কারখানা, খনি, ইটের ভাটা, রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল বা শিল্পের কার্যে ব্যবহৃত সংরক্ষণাগার বা শিল্প কারখানার একই চতুরস্থিত কোনো মাঠ বা আবাসিক ও দাপ্তরিক ভবনও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে:
(১৯) ‘সহকারী কমিশনার (ভূমি)’ অর্থ উপজেলা, থানা বা রাজস্ব সার্কেলে সরকার কর্তৃক নিয়োগকৃত কোনো সহকারী কমিশনার; এবং

(২০) ‘সংস্থা’ অর্থ কতিপয় ব্যক্তিবর্গের সমন্বয়ে গঠিত সংগঠন, উহা সংবিধিবদ্ধ হউক অথবা না হউক এবং সরকারি বা বেসরকারি যেকোনো কোম্পানি, ফার্ম, সমিতি, সংঘ বা কর্তৃপক্ষ, উহা যে নামেই অভিহিত হউক না কেন, ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে।

 

৩। কৃষি ভূমির ভূমি উন্নয়ন কর। — (১) সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, কৃষি ভূমি, চা বাগান এবং অন্যান্য ভূমির ভূমি উন্নয়ন করের হার, সীমা ও শর্ত নির্ধারণ করিতে পারিবে।
(২) কৃষিকার্যের উপর নির্ভরশীল ব্যক্তি বা পরিবারভিত্তিক কৃষি ভূমির মোট পরিমাণ ৮.২৫ (আট দশমিক দুই পাঁচ) একর বা ২৫ (পঁচিশ) বিঘা পর্যন্ত হইলে উহার ভূমি উন্নয়ন কর মওকুফ থাকিবে এবং ইক্ষু, লবণ চাষের ভূমি ও কৃষকের পুকুর (বাণিজ্যিক মৎস্যচাষ ব্যতীত) উক্ত মওকুফের অন্তর্ভুক্ত হইবে:
তবে শর্ত থাকে যে, কৃষিকার্যের উপর নির্ভরশীল ব্যক্তি ও পরিবারভিত্তিক কৃষি ভূমির মোট পরিমাণ ৮.২৫ (আট দশমিক দুই পাঁচ) একর বা ২৫ (পঁচিশ) বিঘার অধিক হইলে, সম্পূর্ণ কৃষি ভূমির ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ করিতে হইবে।
(৩) কৃষি ভূমি পল্লি এলাকা বা পৌর এলাকার যে কোন স্থানে অবস্থিত হউক না কেন, সকল ক্ষেত্রে অভিন্ন ভূমি উন্নয়ন কর হার ও শর্ত প্রযোজ্য হইবে।

 

৪। অকৃষি ভূমির ভূমি উন্নয়ন কর।— (১) অকৃষি ভূমির ভূমি উন্নয়ন করের হার নির্ধারণকল্পে ভূমির মান ও ব্যবহার অনুযায়ী দেশের সকল ভূমি একাধিক শ্রেণিতে শ্রেণিবিন্যাস করা যাইবে।
(২) সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, সময় সময়, উপ-ধারা (১) অনুযায়ী শ্রেণিভুক্ত যেকোনো এলাকার ভূমি উন্নয়ন কর হার নির্ধারণ বা পুনঃনির্ধারণ করিতে পারিবে।
(৩) অকৃষি ভূমিকে ব্যবহারভিত্তিক বাণিজ্যিক, শিল্প এবং আবাসিক ও অন্যান্য শ্রেণিতে বিভাজন করিয়া সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, অকৃষি ভূমির ভূমি উন্নয়ন কর হার নির্ধারণ ও পুনঃনির্ধারণ করিবে।
ব্যাখ্যা। — আবাসিক ও অন্যান্য শ্রেণি’ অর্থে বাণিজ্যিক কার্যে বা শিল্পকার্যে ব্যবহৃত হয় না এইরূপ অকৃষি ভূমি বিবেচিত হইবে, যেমন, সরকারি-বেসরকারি সংস্থার বা ব্যক্তি মালিকানাধীন আবাসিক ও দাপ্তরিক ভবনাদি, রাস্তাঘাট, মাঠ, আঙিনা, স্থাপনা ইত্যাদি।
(৪) যদি কোনো ব্যক্তি শিল্প প্রতিষ্ঠানের নামে খতিয়ান সৃজন না করিয়া কোনো অকৃষি ভূমিতে কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়িয়া তোলে তাহা হইলে উক্ত ভূমির ভূমি উন্নয়ন কর শিল্প প্রতিষ্ঠান হিসাবে প্রদান করিতে হইবে।

(৫) যদি কোনো ব্যক্তি বসত বাড়ির আঙ্গিনায় কোনো ক্ষুদ্র শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়িয়া তোলে তাহা হইলে উক্ত বসত বাড়ির যে অংশে ক্ষুদ্র শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়িয়া তোলা হইয়াছে উহার ব্যবহারভিত্তিক ভূমি উন্নয়ন কর প্রদান করিতে হইবে।
(৬) কোনো অকৃষি ভূমি আংশিক শিল্প বা বাণিজ্যিক কার্যে এবং আংশিক আবাসিক বা অন্যান্য কার্যে ব্যবহৃত হইলে, উক্ত ভূমির সম্পূর্ণ অংশ শিল্প বা বাণিজ্যিক কার্যে ব্যবহৃত বলিয়া গণ্য হইবে।
ব্যাখ্যা।– এই ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, শিল্প প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরের কোনো ফাঁকা স্থান এবং ভবন বা আবাসিক ভবন শিল্প প্রতিষ্ঠান হিসাবে বিবেচিত হইবে।

 

৫। ভূমি উন্নয়ন কর মওকুফ।— ধারা ৩ ও ৪ এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, সরকার সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, যেকোনো ব্যক্তি বা যেকোনো শ্রেণির ব্যক্তিবর্গ অথবা কোন সংস্থাকে উক্ত প্রজ্ঞাপনে উল্লিখিত শ্রেণি ও পরিমাপের কৃষি বা অকৃষি ভূমির ভূমি উন্নয়ন কর মওকুফ করিতে পারিবে।

 

৬। অবিভক্ত দাগ, খতিয়ান, ইত্যাদি।— (১) উত্তরাধিকার বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে হস্তান্তরের ক্ষেত্রে একটি দাগ বিভিন্ন ভাগ বা খন্ডে বিভক্ত হইলে এবং এইরূপে একাধিক ব্যক্তি বা সংস্থা পৃথককরণ ব্যতীত উহা ভোগ-দখল করিতে থাকিলে, উক্ত ভূমি এই আইনের অধীন ভূমি উন্নয়ন কর নির্ধারণের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, একটি দাগ হিসাবে গণ্য হইবে।
(২) কোনো খতিয়ানে একাধিক মালিক, পরিবার বা সংস্থার নাম লিপিবদ্ধ থাকিলে, তাহাদের প্রত্যেকের ভূমির পরিমাণ খতিয়ানে বর্ণিত অংশ অনুসারে নির্ধারণ করিতে হইবে এবং যেক্ষেত্রে কোনো খতিয়ানে মালিকের অংশ পৃথকভাবে উল্লেখ নাই, সেইক্ষেত্রে State Acquisition and Tenancy Act, 1950 (Act No. XXVIII of 1951 ) এর section 143B এর বিধান অনুযায়ী উত্তরাধিকারীগণ কর্তৃক বণ্টননামা দলিল সম্পাদন ও উক্ত বণ্টননামার ভিত্তিতে নামজারি করিয়া ভূমি উন্নয়ন কর নির্ধারণ করিতে হইবে।
(৩) উত্তরাধিকারসূত্রে বা অন্য কোনোভাবে হস্তান্তরের ফলে ভূমির মালিকানা একাধিক ব্যক্তির উপর বর্তাইলে এবং তাহারা জমা-খারিজ করিয়া পৃথক নামজারি না করাইয়া থাকিলে, উক্ত ভূমি একই খতিয়ানভুক্ত গণ্যে উহার ভূমি উন্নয়ন কর নির্ধারণ করিতে হইবে।

 

৭। হাল ও অগ্রিম ভূমি উন্নয়ন কর আদায়। – (১) প্রতি বৎসরের ভূমি উন্নয়ন কর উক্ত বৎসরের ৩০ জুন এর মধ্যে জরিমানা ব্যতীত আদায় করা যাইবে।
(২) ভূমি মালিক আগ্রহী হইলে বকেয়া ও হাল ভূমি উন্নয়ন কর আদায়ের সহিত অথবা পরবর্তীতে অনধিক ৩ (তিন) বৎসরের ভূমি উন্নয়ন কর অগ্রিম প্রদান করিতে পারিবে।

(৩) এই আইন কার্যকর হইবার অব্যবহতি পূর্ববর্তী বৎসরের ভূমি উন্নয়ন কর অব্যবহতি পূর্ববর্তী হারে আদায়যোগ্য হইবে।

 

৮। ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে ভূমি উন্নয়ন কর আদায়। — (১) সরকার, ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে ভূমি উন্নয়ন কর আদায় করিবে এবং উক্ত আদায়কৃত অর্থ বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক, সময় সময়, নির্ধারিত পদ্ধতিতে সরকারের নির্দিষ্ট কোডে জমার ব্যবস্থা করিবে।
(২) ইলেকট্রনিক পদ্ধতি সারা দেশে পূর্ণরূপে প্রবর্তিত না হওয়া পর্যন্ত, সরকার, জনগণের সুবিধার্থে ইলেকট্রনিক পদ্ধতির পাশাপাশি প্রচলিত পদ্ধতিতে যেকোনো ব্যাংকের মাধ্যমে ভূমি উন্নয়ন কর আদায়ের ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে পারিবে।
(৩) ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে আদায়কৃত ভূমি উন্নয়ন করের দাখিলার কপি ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে সংরক্ষিত থাকিবে এবং ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে উক্ত দাখিলা যাচাই করিবার মাধ্যমও উক্ত দাখিলাতে সংযুক্ত থাকিবে।
(৪) ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে আদায়কৃত ভূমি উন্নয়ন করের দাখিলা ভূমি উন্নয়ন কর প্রদানকারী ব্যক্তি বা সংস্থা ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে প্রাপ্ত হইবেন এবং প্রয়োজনে, তিনি উহার প্রিন্ট কপি প্ৰমাণক হিসাবে ব্যবহার করিতে পারিবেন।
(৫) ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা কর্তৃক ইলেকট্রনিক পদ্ধতি ব্যতীত অন্য কোনো পদ্ধতিতে ভূমি উন্নয়ন কর আদায় করা হইলে, ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতেও উক্ত আদায়ের সকল তথ্য হালনাগাদ করিতে হইবে।
(৬) প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা অন্য কোনো কারণে ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে বিপর্যয় দেখা দিলে, প্রচলিত পদ্ধতিতে সাময়িকভাবে ভূমি উন্নয়ন কর আদায় করা যাইবে এবং আদায়কৃত অর্থের সীমা ১০ (দশ) হাজার টাকা বা তদূর্ধ্ব হইলে, আদায়ের দিন বা পরবর্তী কার্যদিবসে উহা ব্যাংকে নির্দিষ্ট কোডে জমা প্রদান করিতে হইবে।
(৭) ইলেকট্রনিক চালানের মাধ্যমে আদায়কৃত অর্থ সরকারের নির্ধারিত কোডে জমা প্রদান করিতে হইবে এবং প্রত্যেক মাস সমাপ্তির পর ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা ইলেকট্রনিক পদ্ধতি হইতে রেজিস্টারের কপি সংগ্রহ করিয়া সংশ্লিষ্ট নথিতে রাখিবেন এবং বৎসরান্তে উক্ত রেজিস্টার মৌজাভিত্তিক বাঁধাই করিয়া সংরক্ষণ করিবেন।
(৮) ইলেকট্রনিক বা প্রচলিত পদ্ধতিতে আদায়কৃত ভূমি উন্নয়ন করের হিসাব বিবরণী ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে রেজিস্টারে সংরক্ষণ করিতে হইবে।

(৯) ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে অর্থ লেনদেনের ক্ষেত্রে, সংশ্লিষ্ট ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক, সময় সময় নির্ধারিত হারে লেনদেনের সেবা মূল্য গ্রহণ করিতে পারিবে।
(১০) কোনো ব্যক্তির নামে বাংলাদেশের একাধিক স্থানে ভূমি থাকিলে তিনি তাহার মালিকানাধীন সকল ভূমির ভূমি উন্নয়ন কর ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে প্রদান করিতে পারিবেন এবং উক্ত ক্ষেত্রে সকল মৌজার হোল্ডিং এ উক্ত তথ্য ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে সংযুক্ত হইবে এবং সংশ্লিষ্ট রেজিস্টারে লিপিবদ্ধ করিতে হইবে।
(১১) সরকার, ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে ব্যবহৃত সকল ধরনের ডাটা সংরক্ষণ ও নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে পারিবে।

 

৯। বকেয়া ভূমি উন্নয়ন কর আদায় ও আদায়ের পদ্ধতি ।— (১) কোনো বৎসরের ভূমি উন্নয়ন কর উক্ত বৎসরের ৩০ জুন তারিখের মধ্যে পরিশোধ না করা হইলে, উহা বকেয়া ভূমি উন্নয়ন কর হিসাবে বিবেচিত হইবে।
(২) ভূমি মালিক একাদিক্রমে ৩ (তিন) বৎসর বকেয়া ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ না করিলে,বকেয়া ভূমি উন্নয়ন কর প্রথম বৎসর হইতে তৃতীয় বৎসর পর্যন্ত বার্ষিক ৬.২৫% (ছয় দশমিক দুই পাঁচ শতাংশ) হারে জরিমানাসহ আদায়যোগ্য হইবে এবং তৃতীয় বৎসর শেষে উক্ত বকেয়া ভূমি উন্নয়ন কর Public Demands Recovery Act, 1913 ( Act No. III of 1913) এর বিধান অনুসারে সার্টিফিকেট মামলা রুজু করিয়া আদায় করা যাইবে।
(৩) প্রচলিত পদ্ধতির পাশাপাশি ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতেও উপ-ধারা (২) এর অধীন সার্টিফিকেট মামলা রুজু ও সার্টিফিকেট মামলার সকল কার্যক্রম গ্রহণ করা যাইবে :
তবে শর্ত থাকে যে, মামলা চলাকালে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি জরিমানাসহ বকেয়া ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ করিলে, মামলা প্রত্যাহার করিতে হইবে।
(৪) ধারা ৮ এ উল্লিখিত ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতেও ভূমি উন্নয়ন করের বকেয়া আদায় করা যাইবে।
(৫) অন্য কোনো আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের অধীন ভূমি উন্নয়ন করের দাবি কখনো তামাদি হইবে না।

 

১০। ভূমি মালিকের মৌজাভিত্তিক জমাবন্দি ।— ( ১ ) কোনো ভূমি মালিকের একই মৌজায় একাধিক খতিয়ানে ভূমি থাকিলে, উহা একটি জমাবন্দিতে একত্রিত করিয়া ভূমি উন্নয়ন কর নির্ধারণ ও আদায় করিতে হইবে।

(২) ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে একক মালিকের মৌজাভিত্তিক জমাবন্দি অথবা উপজেলা, জেলা বা বিভিন্ন এলাকায় উক্ত মালিকের মালিকানাধীন ভূমির তথ্য মন্তব্য কলামে প্রদর্শনের ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে হইবে।
(৩) উপ-ধারা (২) এর উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, ভূমি মালিকের তথ্যাদির সহিত তাহার মোবাইল নম্বর এবং জাতীয় পরিচয়পত্র বাধ্যতামূলকভাবে সংযুক্ত করিতে হইবে এবং উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে ভূমি উন্নয়ন কর নির্ধারণ ও আদায় করিতে হইবে।

 

১১। ভূমি উন্নয়ন কর নির্ধারণে সর্বনিম্ন ভূমির পরিমাণ । — কোনো ভূমি মালিকের কোনো দাগে ভূমির পরিমাণ শতাংশের ভগ্নাংশ থাকিলে, উহা পরবর্তী পূর্ণ শতাংশে গণ্য করিয়া ভূমি উন্নয়ন কর নির্ধারণ করা হইবে, অর্থাৎ ন্যূনতম এক শতাংশের ভূমি উন্নয়ন কর আদায় করিতে হইবে।

 

১২। টাকার অঙ্ক।—জমাবন্দি ভিত্তিক ভূমি উন্নয়ন করের দাবি ও বকেয়ার জন্য প্রদেয় জরিমানার পরিমাণ, উভয় ক্ষেত্রে, টাকার ভগ্নাংশ থাকিলে, উহা প্রচলিত নিয়মে পরবর্তী পূর্ণ টাকায় নির্ধারণ ও হিসাব করিয়া আদায় করিতে হইবে।

 

১৩। ভূমি উন্নয়ন কর প্রদান হইতে অব্যাহতি ।– (১) সরকার বা সরকার কর্তৃক এতদুদ্দেশ্যে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো কর্মকর্তা লিখিত আদেশ দ্বারা, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে, সুনির্দিষ্ট শর্ত সাপেক্ষে, কোনো সরকারি কবরস্থান, শ্মশান, মসজিদ, ঈদগাহ মাঠ, সর্বজনীন মন্দির, গির্জা বা সর্বসাধারণের প্রার্থনার স্থানসমূহ এবং খেলার মাঠকে ভূমি উন্নয়ন কর প্রদান হইতে অব্যাহতি প্রদান করিতে পারিবেন।
(২) উপ-ধারা (১) এ যাহা কিছুই থাকুন না কেন, ব্যক্তিগত, পারিবারিক, গোত্রীয়, দলীয় ও সম্প্রদায়ভিত্তিক উপাসনালয় বা সমাধিক্ষেত্র দান ও দর্শনির অর্থে অথবা বাণিজ্যিক কার্যক্রম দ্বারা পরিচালিত উপাসনালয় বা সমাধিক্ষেত্রকে ভূমি উন্নয়ন কর প্রদান হইতে অব্যাহতি প্রদান করা যাইবে না।

 

১৪। মওকুফ দাখিলা । — (১) ধারা ৩ এর উপ-ধারা (২) এ বর্ণিত ভূমি উন্নয়ন কর মওকুফপ্রাপ্ত কৃষি ভূমি এবং ধারা ১৩ এর উপ-ধারা (১) এর অধীন ভূমি উন্নয়ন কর অব্যাহতিপ্রাপ্ত ভূমির অব্যাহত ভোগদখলের প্রমাণপত্র রাখিবার স্বার্থে সংশ্লিষ্ট ভূমি মালিকের নিকট হইতে প্রতিটি হোল্ডিং বা জমাবন্দি বাবদ সরকার কর্তৃক, সময় সময়, নির্ধারিত ফি আদায় করিয়া দাখিলা প্রদান করিতে হইবে।
(২) ভূমি মালিক ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত ফি প্রদান করিয়া ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে দাখিলা গ্রহণ করিতে পারিবেন।
(৩) সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত মওকুফ দাখিলা প্রদান ফির হার পুনঃনির্ধারণ করিতে পারিবে।

 

১৫। ভূমি উন্নয়ন কর নির্ধারণ।— (১) ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা প্রতি বৎসর জুলাই মাসের মধ্যে তাহার এখতিয়ারাধীন এলাকাসমূহ পরিদর্শন করিয়া ভূমির ব্যবহারভিত্তিক অবস্থা বিবেচনা করিয়া নির্ধারিত ফরমে সকল মৌজার জমাবন্দিভিত্তিক ভূমি উন্নয়ন কর নির্ধারণ করিয়া নির্ধারিত ফরমে তালিকা প্রণয়ন করিবেন এবং উহা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর নিকট প্রেরণ করিবেন।
(২) সহকারী কমিশনার (ভূমি) উপ-ধারা (১) এর অধীন প্রাপ্ত ভূমির ব্যবহার ভিত্তিক প্রস্তুতকৃত ভূমি উন্নয়ন কর নির্ধারণ তালিকা পরীক্ষান্তে ৭ (সাত) কার্যদিবসের মধ্যে অনুমোদন করিবেন।
(৩) সহকারী কমিশনার ( ভূমি) কর্তৃক উপ-ধারা (২) এর অধীন অনুমোদিত ভূমি উন্নয়ন কর নির্ধারণ তালিকা উপজেলা ভূমি অফিস, সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন ভূমি অফিস এবং সংশ্লিষ্ট মৌজা এলাকায় জনসাধারণের পরিদর্শনের লক্ষ্যে প্রকাশ ও প্রচার করিতে এবং ওয়েবসাইটে প্রদর্শন করিতে হইবে।
(৪) ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে সকল জমাবন্দি অন্তর্ভুক্ত থাকিলে ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা জুলাই মাসের মধ্যে ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে নির্ধারিত ফরমে ভূমি উন্নয়ন করের তালিকা প্রণয়ন করিবেন এবং ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে উহা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর নিকট প্রেরণ করিবেন।
(৫) সহকারী কমিশনার (ভূমি) উপ-ধারা (৪) এর অধীন প্রাপ্ত তালিকা ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে অনুমোদন প্রদান করিবেন এবং ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা অনুমোদিত তালিকা ইলেকট্রনিক পদ্ধতি হইতে প্রিন্ট করিয়া উহা নিজ অফিসের নোটিশ বোর্ডে লটকাইয়া রাখিবেন।
(৬) সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে অনুমোদিত তালিকার জমাবন্দির মালিকগণের নিকট খুদে বার্তা সেবা (SMS) এর মাধ্যমে ভূমি উন্নয়ন করের পরিমাণ জানাইয়া দিবেন এবং উক্ত খুদে বার্তা ভূমি উন্নয়ন কর নির্ধারণের নোটিশ জারি মর্মে বিবেচিত হইবে।

 

১৬। পুনরীক্ষণ।— (১) ধারা ১৫ অনুযায়ী ভূমি উন্নয়ন কর নির্ধারণী তালিকা প্রকাশ, প্রচার ও খুদে বার্তা সেবা (SMS) এর মাধ্যমে অবহিত হইবার পর কোনো ব্যক্তি সংক্ষুব্ধ হইলে তিনি তালিকা প্রকাশের বা প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, খুদে বার্তা সেবা (SMS) প্রাপ্তির পরবর্তী ১৫ (পনেরো) কার্যদিবসের মধ্যে সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর নিকট লিখিতভাবে বা ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে পুনরীক্ষণের আবেদন করিতে পারিবেন।
(২) সহকারী কমিশনার (ভূমি) এতৎসংক্রান্ত কোনো আপত্তি বা আবেদন প্রাপ্তির ১৫ (পনেরো) কার্যদিবসের মধ্যে উহা নিষ্পত্তি করিবেন।
(৩) ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে গৃহীত পুনরীক্ষণের আবেদন ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে নিষ্পত্তি করিতে হইবে।

 

১৭। আপিল।— (১) কোনো ব্যক্তি সহকারী কমিশনার (ভূমি) কর্তৃক প্রদত্ত আদেশ দ্বারা সংক্ষুব্ধ হইলে, তিনি উক্তরূপ আদেশ জারির তারিখ হইতে ১৫ (পনেরো) কার্যদিবসের মধ্যে অথবা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ধারা ১৬ এর উপ-ধারা (২) এ নির্ধারিত সময় সীমার মধ্যে আপত্তি বা আবেদন নিষ্পত্তি করিতে ব্যর্থ হইলে, উক্তরূপ সময়সীমা অতিক্রান্তের ১৫ (পনেরো) কার্যদিবসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি সংশ্লিষ্ট জেলার কালেক্টর এর নিকট লিখিত বা ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে আপিল করিতে পারিবেন।
(২) কালেক্টর উপ-ধারা (১) এর অধীন কোনো আপিল আবেদন প্রাপ্তির ৩০ (ত্রিশ) কার্যদিবসের মধ্যে তিনি নিজে অথবা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) এর মাধ্যমে উহা নিষ্পত্তি করিবেন এবং উক্ত বিষয়ে কালেক্টরের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলিয়া গণ্য হইবে।
(৩) ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে গৃহীত আপিল আবেদন ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে নিষ্পত্তি করিতে হইবে।

 

১৮। দেওয়ানি আদালতের এখতিয়ার বারিত।— এই আইনের অধীন সরকার কর্তৃক নির্ধারিত বিভিন্ন শ্রেণির ভূমির ভূমি উন্নয়ন কর হারের বিরুদ্ধে কোনো দেওয়ানি আদালতে কোনো প্রশ্ন বা আপত্তি উত্থাপন করা যাইবে না।

 

১৯। ভূমি উন্নয়ন কর আদায়ের সময় বৃদ্ধি ।— সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, অতিমারি (Pandemic), মহামারী ( epidemic), দৈব-দুর্বিপাক (force majeure) এর কারণে বা সরকার কর্তৃক, সময় সময়, নির্ধারিত কোনো অনিবার্য পরিস্থিতিতে, ভূমি উন্নয়ন কর আদায়ের সময়সীমা বৃদ্ধি করিতে পারিবে।

 

২০। ভূমি উন্নয়ন কর হার হ্রাস। —— সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, অতিমারি (pandemic), মহামারী (epidemic), দৈব-দুর্বিপাক (force majeure) এর কারণে বা সরকার কর্তৃক, সময় সময়, নির্ধারিত কোনো অনিবার্য পরিস্থিতিতে, ভূমি উন্নয়ন কর হার হ্রাস করিতে পারিবে।

 

২১। বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা। —এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে।

 

২২। রহিতকরণ ও হেফাজত। — (১) Land Development Tax Ordinance, 1976 (Ordinance No. XLII of 1976), অতঃপর উক্ত Ordinance বলিয়া উল্লিখিত, এতদ্বারা রহিত করা হইল।

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন রহিতকরণ সত্ত্বেও উক্ত Ordinance এর অধীন—
(ক) কৃত কোনো কার্য, গৃহীত কোনো ব্যবস্থা বা চলমান কোনো কার্য এই আইনের অধীন কৃত, গৃহীত বা চলমান বলিয়া গণ্য হইবে;
(খ) প্রণীত কোনো বিধি, প্রবিধান, জারীকৃত কোনো প্রজ্ঞাপন, প্রদত্ত কোনো আদেশ বা বিজ্ঞপ্তি এই আইনের সহিত সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া সাপেক্ষে, এই আইনের অধীন প্রণীত, জারীকৃত বা প্রদত্ত বলিয়া গণ্য হইবে; এবং
(গ) দায়েরকৃত কোনো মামলা বা সূচিত কোনো কার্যধারা অনিষ্পন্ন থাকিলে উহা এইরূপে নিষ্পন্ন করিতে হইবে, যেন উহা এই আইনের অধীন দায়েরকৃত বা সূচিত হইয়াছে।

 

২৩। ইংরেজিতে অনুদিত পাঠ প্রকাশ। — (১) এই আইন প্রবর্তনের পর সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইনের ইংরেজিতে অনূদিত একটি নির্ভরযোগ্য পাঠ (Authentic English Text) প্রকাশ করিতে পারিবে।
(২) বাংলা ও ইংরেজি পাঠের মধ্যে বিরোধের ক্ষেত্রে বাংলা পাঠ প্রাধান্য পাইবে।

কে, এম, আব্দুস সালাম
সিনিয়র সচিব।

 

সাব-রেজিস্ট্রার শাহাজাহান আলী বিপিএএ

Add comment

error: Content is protected !!