Last Updated on 08/02/2023 by সাব-রেজিস্ট্রার শাহাজাহান আলী বিপিএএ
জমি ক্রয়ের পুর্বে নিম্নলিখিত বিষয়গুলো যাচাই করুনঃ
- সম্পত্তিতে বিক্রেতার সঠিক মালিকানা ও উক্ত সম্পত্তি বিক্রয়ের বৈধ অধিকার তার আছে কি-না তা যাচাই করুন।
- সম্পত্তির সর্বশেষ খতিয়ান দাতার নিজ নামে আছে কিনা কিংবা পূর্ব পুরুষের সম্পত্তি হলে সম্পত্তির সর্বশেষ খতিয়ান পূর্ব পুরুষের নামে আছে কি-না তা যাচাই করুন। কারন সম্পত্তি হস্তান্তর আইন, ১৮৮২ এর ৫৩সি ধারা মোতাবেক, কোন ব্যক্তি উত্তরাধিকার ব্যতীত অন্যভাবে সম্পত্তির মালিক হয়ে থাকলে, রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইন, ১৯৫০ এর অধীন তাহার নিজ নামে সর্বশেষ খতিয়ান না থাকলে, অথবা উত্তরাধিকার সূত্রে সম্পত্তির মালিক হয়ে থাকলে, তার নিজ নামে বা পূর্ববর্তী নামে সর্বশেষ খতিয়ান প্রস্তুত করা না থাকলে, কোন স্থাবর সম্পত্তি বিক্রয় করতে পারবে না, যদি অন্য কোন ভাবে বিক্রয় হয়, তবে তা অবৈধ হবে।
- হাল সন পর্যন্ত ভূমি উন্নয়ন কর (খাজনা) পরিশোধ আছে কি-না। পূর্বেই ভূমি উন্নয়ন কর (খাজনা) পরিশোধ করা থাকলে ভূমি উন্নয়ন কর (খাজনা) পরিশোধের দাখিলা বা রশিদটি জাল কিনা তা সংশ্লিষ্ট সহকারী ভূমি উন্নয়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ে গিয়ে যাচাই করুন।
- প্রস্তাবিত সম্পত্তির দখল বিক্রেতার আছে কি-না। সম্পত্তিতে বিক্রেতার দখল না থাকলে সে জমি ক্রয় করা ঠিক হবে না।
- সম্পত্তিটি খাস কিংবা সরকারি কিনা যাচাই করুন। সরকারী বা খাস সম্পত্তি বিধিবহির্ভূত ভাবে ক্রয়-বিক্রয় শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
জমি-জমা ও দলিল রেজিস্ট্রি সংক্রান্ত সকল তথ্যের জন্য এখানে ক্লিক করুন।
- অন্য কোন পক্ষের সাথে বিক্রয় চুক্তি বা বায়না পত্র রেজিস্ট্রি করা আছে কিনা তা যাচাই করুন। সম্পত্তি হস্তান্তর আইন, ১৮৮২ এর ৫৩বি ধারা অনুযায়ী, বায়নাপত্র বা বিক্রয়চুক্তি (contract for sale) বলবৎ থাকাকালে, বায়নাপত্রের অধীন কোন স্থাবর সম্পত্তি, উক্ত চুক্তি আইনানুগভাবে বাতিল না করে, বায়নাপত্র গ্রহীতা ব্যতীত, অন্য কোন পক্ষের নিকট হস্তান্তর করা যাবে না, অন্য কোন ভাবে হস্তান্তর করা হলে তা অবৈধ হবে।
- ব্যাংক বা কোন আর্থিক প্রতিষ্টানের নিকট দায়বদ্ধ কিনা তা যাচাই করুন। কারন সম্পত্তি হস্তান্তর আইন, ১৮৮২ এর ৫৩ডি ধারা মোতাবেক, বন্ধক-গ্রহীতার লিখিত সম্মতি ব্যতীত কোন নিবন্ধিত বন্ধকী স্থাবর সম্পত্তি পুনঃবন্ধক বা বিক্রয় করা যায় না, এতৎসত্ত্বেও কোন পুনঃবন্ধক বা বিক্রয় করা হলে তা অবৈধ হবে।
- নাবালকের সম্পত্তি হলে বৈধ অভিভাবক অথবা আদালত কর্তৃক নিযুক্ত অভিভাবকের বিক্রয়ের ক্ষমতা আছে কি-না যাচাই করুন।
- হস্তান্তরের জন্য প্রস্তাবিত সম্পত্তি বাংলাদেশ দালাল (বিশেষ ট্রাইবুনাল) আদেশ ১৯৭২ এর অধীন ক্রোকের আওতাধীন কিনা যাচাই করুন।
- বাংলাদেশ পরিত্যক্ত সম্পত্তি (নিয়ন্ত্রন,ব্যবস্থাপনা ও নিষ্পত্তি) আদেশ ১৯৭২,এর অর্থানুযায়ী পরিত্যক্ত কিনা যাচাই করুন।
- হস্তান্তরের জন্য প্রস্তাবিত সম্পত্তি সরকারের অনুকুলে বাজেয়াপ্ত কিনা যাচাই করুন।
- প্রস্তাবিত হস্তান্তর আপাততঃ বলবত অন্য কোন আইনের কোন বিধানের সহিত সাংঘর্ষিক কিনা যাচাই করুন।
- জমি বিক্রয়ের জন্য অ্যাটর্নি নিয়োগ করা আছে কি-না তা যাচাই করুন। অ্যাটর্নি নিয়োগ করা থাকলে অ্যাটর্নি ছাড়া মূল মালিকের সম্পাদন গ্রহণযোগ্য নয়। অবশ্য বিধি মোতাবেক পাওয়ার অব অ্যাটর্নি দলিল বাতিল করে মূল মালিকের সম্পাদনে দলিল রেজিস্ট্রি করা যাবে।
- ওয়াকফ সম্পত্তি কিনা দেখুন। ওয়াকফ আইন অনুসারে, ওয়াকফ প্রশাসন বা সরকারের পূর্ব অনুমতি ব্যতীত ওয়াকফ সম্পত্তি ক্রয়-বিক্রয় করা যায় না।
- জমি নিয়ে মামলা মোকদ্দমা চলছে কিনা যাচাই করুন। মামলা চলমান অবস্থায় জমি কিনবেন না।
- বসতবাড়ি করার জন্য জমি কিনতে চাইলে, জমি থেকে বের হওয়ার রাস্তা আছে কিনা যাচাই করুন।
- ওয়ারিশি জমি কিনতে চাইলে, ঐ সম্পত্তিতে মোট কতজন ওয়ারিশ আছে তা খোজ নিয়ে দেখুন। আপনি যে ওয়ারিশের নিকট থেকে কিনবেন, তার ততটুকু বিক্রয়ের অধিকার আছে কিনা যাচাই করুন।
জমি ক্রয়ের পূর্বেই সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করুন। মনে রাখবেন, জমি ক্রয়ের পূর্বে আপনার অসাবধানতা বশত আপনি মামলা মোকদ্দমার সম্মুখীন হতে পারেন। হারাতে পারেন আপনার কষ্টার্জিত আয়ে কেনা মূল্যবান জমি। তাই ক্রয়ের পূর্বে ভেবে দেখুন, আপনি মামলা কিনবেন, নাকি জমি কিনবেন। কারণ বিজ্ঞ আদালতের বেশির ভাগ মামলা জমা-জমি সংক্রান্ত।
জমির মূলমালিক মারা যাওয়ার পর তার দুটি ছেলেসন্তান এবংস্ত্রীর নিকট থেকে যাবতীয় দলিল ও প্রয়োজনীয় কাগজ পত্রের প্রমাণ সাপেক্ষে জমি ক্রয় করার পর মিউটেশন করতে গেলে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ বলে ওয়ারিশ সার্টিফিকেট ছাড়া মিউটেশন দেওয়া যাবে না।
এখন মূল মালিকের স্হায়ীঠিকানা ও যোগাযোগের কোনো ব্যাবস্হা না। এই ক্ষেত্রে কি করা যা।